৩০০০ পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী, সর্বকালের রেকর্ড, শারদোৎসবের সূচনা মমতার
হিন্দুস্তান টাইমস | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বৃষ্টিকে সঙ্গী করেই শনিবার থেকে শুরু হল শারদোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা। আর সেই সূচনার কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি দুর্গাপুজো উদ্বোধন করছেন তিনি, যা নজিরবিহীন এবং সম্ভবত সর্বকালের রেকর্ড। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা, আবার জেলাগুলি মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের তালিকায় রয়েছে একের পর এক পুজো ক্লাব।
শনিবার একাধিক পুজোর উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী শুধু শুভেচ্ছা জানাননি, বরং বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের গুরুত্ব। তাঁর কথায়, প্রত্যেকের নিজস্ব ধর্ম, ভাষা, মত আছে। তিনি চান সকলেই তাঁদের মাতৃভাষাকে সম্মান করুন। কিন্তু বাংলায় কথা বললেই যদি অত্যাচার করতে হয়, সেটা মেনে নেওয়া যায় না।
এছাড়া তিনি বাঙালি অস্মিতার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাংলার শিল্প, সাহিত্য, সংগীত থেকে শুরু করে কৃষিপণ্য সবকিছুই যেন পুজোর সময়ে দেশ-বিদেশের অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয়। তাঁর নির্দেশ, বিদেশি পর্যটকরা এলে তাঁদের হাতে ধানের ছড়া তুলে দেওয়া হোক, যা সরাসরি বাংলার কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে উদ্বোধন করেন হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজো। এরপর টালা প্রত্যয় এবং শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপের দ্বারোদ্ঘাটন করেন তিনি। টালা প্রত্যয় এবার পা দিল শতবর্ষে। তাদের থিম ‘বীজ অঙ্গন’, যার ভাবনা থেকে শুরু করে গান সবেতেই মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে। শ্রীভূমির মঞ্চ থেকেও ঐক্যের বার্তা দেন তিনি। উদ্বোধনী ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। তাঁর বক্তব্য, বাংলার প্রায় ২২ লক্ষ শ্রমিক দেশের নানা প্রান্তে কাজ করেন। আবার প্রায় দেড় কোটি মানুষ বাইরে থেকে এ রাজ্যে এসে জীবিকা নির্বাহ করেন। দেশ শিখিয়েছে ঐক্যই আসল শক্তি। শ্রমিকদের অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতে নিজের লেখা একটি গানও প্রকাশ করেছেন তিনি, যেখানে সাধারণ মানুষের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
পুজো উপলক্ষে এদিন প্রকাশিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ও সুর করা ১৭টি গান নিয়ে একটি অ্যালবাম। শিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায় থেকে জিত বিভিন্ন শিল্পী সেই গান গেয়েছেন। ‘সেই মেধাই আসল মেধা, যে সমাজ তৈরি করে’- এই গানটির উল্লেখ করেই মমতা জানান, প্রতিটি মানুষের মেধাকেই মূল্য দিতে হবে, বিশেষত প্রান্তিক শ্রেণির শ্রমজীবী মানুষদের।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যস্ততা থাকে। তবে এবারের মতো এত বিপুল সংখ্যক উদ্বোধনের নজির আগে নেই। ভার্চুয়াল মাধ্যমের পাশাপাশি সরাসরি উপস্থিত থেকেও একাধিক মণ্ডপে তিনি ফিতে কাটছেন। বলা হচ্ছে, এটাই সম্ভবত কোনও মুখ্যমন্ত্রীর করা সর্বাধিক সংখ্যক পুজো উদ্বোধনের রেকর্ড।