আজকাল ওয়েবডেস্ক: নবরাত্রির প্রাক্কালে দেশবাসীর উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি একসঙ্গে দুটি উৎসবের সূচনার ঘোষণা করেন—শক্তির আরাধনার উৎসব নবরাত্রি এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের নতুন অধ্যায় জিএসটি সেভিংস ফেস্টিভ্যাল। সোমবার থেকেই শুরু হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত জিএসটি ২.০ সংস্কার, যা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সমাজ—সবার জন্যই নতুন সুযোগ ও সঞ্চয়ের দ্বার খুলে দেবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শুরুতেই দেশবাসীকে নবরাত্রির শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “আগামীকাল থেকে শক্তির আরাধনার উৎসব নবরাত্রি শুরু হচ্ছে। আপনাদের সবাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। নবরাত্রির প্রথম দিনেই দেশ আত্মনির্ভর ভারতের পথে এক বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে।”
এরপর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে আগামীকাল থেকে নতুন প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার কার্যকর হতে যাচ্ছে। তিনি একে “জিএসটি সেভিংস ফেস্টিভ্যাল” বলে অভিহিত করেন। তাঁর কথায়, “আপনার সঞ্চয় বাড়বে এবং আপনার পছন্দের জিনিস কেনা আরও সহজ হয়ে উঠবে। দরিদ্র থেকে মধ্যবিত্ত, যুবসমাজ, মহিলারা এবং ব্যবসায়ীরা—সবাই এর সুফল ভোগ করবেন।”
সবার জন্য সঞ্চয়ের বার্তাপ্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য—অর্থনীতিকে আরও স্বচ্ছ, সহজ এবং গণমুখী করে তোলা। তিনি বলেন, “আমি দেশের কোটি কোটি মানুষকে অভিনন্দন জানাই। এই সংস্কার আমাদের বৃদ্ধির গল্পকে ত্বরান্বিত করবে, ব্যবসা করার সহজতাকে বাড়াবে, অধিক বিনিয়োগ টানবে এবং প্রতিটি রাজ্যকে জাতীয় উন্নয়নের সমান অংশীদার করবে।”
জিএসটি ২.০–এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার উপর করের বোঝা হ্রাস করা, যাতে সাধারণ ভোক্তারা সাশ্রয়ী দামে পণ্য কিনতে পারেন। একইসাথে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ব্যবস্থা তৈরি হবে যাতে তারা কম ঝামেলায় ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
আত্মনির্ভর ভারতের পথে নতুন পদক্ষেপপ্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে জোর দিয়ে বলেন, এই সংস্কার কেবল অর্থনৈতিক সংস্কার নয়, বরং আত্মনির্ভর ভারতের ভিশনের অংশ। তাঁর বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, “নবরাত্রি শক্তির আরাধনার উৎসব। আগামীকাল থেকে দেশের অর্থনৈতিক শক্তিও নতুন রূপে প্রকাশ পাবে। এই সংস্কার কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াবে না, বরং দেশের প্রতিটি নাগরিককে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।”
কারা লাভবান হবেন?দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি: দৈনন্দিন পণ্য ও পরিষেবায় সঞ্চয় হবে, ফলে মাসিক বাজেটের চাপ কমবে।যুবসমাজ ও মহিলারা: প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা আরও সহজ হবে, পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা: জিএসটি রিটার্ন ও কর প্রদানের প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় ব্যবসা পরিচালনা আরও স্বচ্ছ হবে।রাজ্য সরকারগুলো: প্রত্যেক রাজ্য সমানভাবে উন্নয়নের সুফল ভোগ করবে।
মোদির বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল যে তিনি এই সংস্কারকে উৎসবের সঙ্গে মিলিয়ে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে চান। নবরাত্রির মতো শুভক্ষণে শুরু হওয়া এই সংস্কার দেশবাসীর মনে ইতিবাচক মনোভাব জাগিয়ে তুলবে বলে তাঁর আশা। জিএসটি ২.০ সংস্কারের ঘোষণার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদি নতুন অর্থনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা করলেন। তাঁর মতে, এটি দেশের অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, সাধারণ মানুষের সঞ্চয় বাড়াবে এবং ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও গতিশীল করবে। নবরাত্রির শুভক্ষণে সঞ্চয়ের উৎসব শুরু হওয়ায় দেশবাসী যেমন আনন্দিত, তেমনি আশাবাদীও—যে এই সংস্কার আত্মনির্ভর ভারতের যাত্রাপথকে আরও সুদৃঢ় করবে।