• টিকিট চেক করতে এসেই 'ফলো রিকোয়েস্ট'! টিকিট পরীক্ষকের কাণ্ড দেখে হাঁ সবাই...
    আজকাল | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রেলযাত্রাকে বরাবরই মহিলাদের জন্য অন্যতম নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয়। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরা, সিসিটিভি নজরদারি, রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আর পি এফ) টহলদারি এবং হেল্পলাইন নম্বরের মতো একাধিক সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তার পরেও কিছু ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, একা ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে মহিলাদের কেন সব সময় সতর্ক থাকা উচিত। সম্প্রতি এমনই এক ‘অস্বস্তিকর’ অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন এক তরুণী, যা যাত্রী সুরক্ষা, বিশেষ করে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

    সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রেডিটে ওই তরুণী অভিযোগ করেন, ট্রেনে তাঁর টিকিট পরীক্ষা করার কিছুক্ষণের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট টিকিট পরীক্ষক (টিসি) তাঁকে ইনস্টাগ্রামে ‘ফলো রিকোয়েস্ট’ পাঠান। এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত অস্বস্তি বোধ করেন এবং তাঁর ব্যক্তিগত পরিসরে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করেন।

    নিজের অভিজ্ঞতার কথা বিস্তারিত জানিয়ে ওই তরুণী লেখেন, “আমি সম্প্রতি ট্রেনে ভ্রমণ করছিলাম। পরে খেয়াল করি, যে টিকিট পরীক্ষক আমার কামরায় টিকিট পরীক্ষা করেছিলেন, তিনি কোনওভাবে ইনস্টাগ্রামে আমাকে খুঁজে বের করে ফলো রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন। আমার অনুমান, সংরক্ষণ তালিকা থেকেই উনি আমার নাম পেয়েছেন। সত্যি বলতে, বিষয়টা অত্যন্ত বিরক্তিকর লেগেছে, কারণ যাত্রীরা ভ্রমণের জন্য যে ব্যক্তিগত তথ্য দেন, তা একান্তই গোপনীয়।”

    তরুণীর এই পোস্টটি প্রকাশ্যে আসতেই নেটদুনিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। যাত্রীদের সুরক্ষা এবং তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। বহু ব্যবহারকারী ওই তরুণীকে বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরামর্শ দেন এবং ওই টিকিট পরীক্ষকের সঙ্গে কোনও রকম সংযোগ স্থাপন করতে নিষেধ করেন।

    এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, “দয়া করে রিকোয়েস্ট গ্রহণ করবেন না! এটা সরাসরি একটি অস্বস্তিকর আচরণ। আপনি গ্রহণ করলে মেসেজের বন্যায় ভেসে যাবেন।” অন্য একজন লেখেন, “এই ঘটনাটি অস্বাভাবিক এবং কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

    শুধু তাই নয়, এর পরেই আরও বহু মহিলা নিজেদের একই ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। এক তরুণী নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে লেখেন, “এক বার এক টিকিট পরীক্ষক আমার টিকিট দেখার পর ফিরে এসে আমাকে তাঁকে ফলো করতে বলেন। আমার তখন অল্প বয়স এবং ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই ওঁর পিছু পিছু সেকেন্ড এসি কামরা পর্যন্ত যাই। সেখানে ওই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি আমাকে বলেন যে তিনি আমার বন্ধু হতে চান এবং জোর করে আমার ফোন নম্বর নেন।”

    অনেকেই আবার তুলে ধরেন, কেন এখন আর ট্রেনের কামরার বাইরে যাত্রীদের নামের তালিকা টাঙানো হয় না। এক ব্যক্তির কথায়, “ঠিক এই কারণগুলোর জন্যই রেল কর্তৃপক্ষ কামরার বাইরে যাত্রিতালিকা টাঙানোর প্রথা তুলে দিয়েছে।”

    অন্য একটি মন্তব্যে লেখা হয়, “আপনি যদি কোনও ভ্লগার হতেন এবং নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের কথা উল্লেখ করতেন, তা হলে হয়তো বিষয়টা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু আপনার বিবরণ অনুযায়ী, ওই টিকিট পরীক্ষকের আচরণ অত্যন্ত বিরক্তিকর। আপনার অবশ্যই অভিযোগ জানানো উচিত।”

    সব মিলিয়ে, এই ঘটনাটি ভ্রমণের সময় সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ব্যক্তিগত সতর্কতা এবং তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে সচেতন থাকা কতটা জরুরি তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। 
  • Link to this news (আজকাল)