উষাদি তো স্তোত্রপাঠ পারেন না, তেমনই রকগান আমার ঘরানা নয়: ‘রকস্তোত্র’ নিয়ে অজয় চক্রবর্তী
আনন্দবাজার | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গিয়েছে। রকসঙ্গীতের মাধ্যমে দুর্গাকে আবাহন জানালেন উষা উত্থুপ, অজয় চক্রবর্তী ও তন্ময় বসু। সাধারণত দেবীপক্ষের সূচনা বলতেই মানুষ বোঝেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’-কেই। তবে কি এ বার সেই ছকই ভাঙা হচ্ছে?
শিলাদিত্য-সোম জুটির শিলাদিত্য আনন্দবাজার ডট কম-কে জানালেন, নতুন ভাবে তাঁরা দেবীবন্দনা বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। তাঁদের বিশ্বাস, নতুন প্রজন্ম এই ‘রকস্তোস্ত্র’ ভাল ভাবেই গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, “রক হলেও গানটি কারও কানে লাগছে না।” ছক ভাঙলেই বিতর্ক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে শিলাদিত্যের দাবি, এই নিয়ে কোনও বিতর্ক হবে না।
গিটার, তবলা, ড্রাম-সহযোগে গানে ভরিয়ে তোলেন উষা উত্থুপ। তিনি আশা করছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এই গান পরিচিতি পাবে। তিনি বলেন, “অজয়দা ও তন্ময়দার সঙ্গে কাজ করে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। তন্ময়দা বহু দিনের বন্ধু। আর অজয়দাকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি। মানুষ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইতে পারাটাকে কঠিন বলে মনে করে, ভয় পায়। কিন্তু মন দিয়ে এটা করা উচিত। ভয় ছাড়তে হবে। আমি যখন গাইতে পারছি, যে কেউ গাইতে পারবে।”
এই দিন রকসঙ্গীত গেয়েছেন উষা আর রকসঙ্গীতের মোড়কে স্তোত্রপাঠ করেছেন অজয় চক্রবর্তী। তিনি জানান, স্তোত্রকে বিকৃত করে কিছু করা হয়নি। সংস্কৃত উচ্চারণ সঠিক রেখেই সবটা করা হয়েছে। ভারতীয় সংস্কৃতি ও ভারতীয় আধ্যাত্মিকতা যত বেশি পৌঁছে দেওয়া যায় ততই ভাল, মনে করেন সঙ্গীতশিল্পী।
তা হলে কি কখনও এমন উলটপুরাণ দেখা যাবে, যেখানে রকসঙ্গীত গাইছেন অজয় চক্রবর্তী আর স্তোত্রপাঠ করছেন উষা উত্থুপ? প্রশ্ন শুনে অজয় চক্রবর্তী বলেন, “উষা উত্থুপ স্তোত্রপাঠ করবেন কেন? তিনি স্তোত্রপাঠ করতে পারেন না। এটা তো শিখতে হয়! যে কেউ ইচ্ছে করলেই স্তোত্রপাঠ করতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি এলে আমিই তো স্তোত্রপাঠ করি। আর কে করেন? আমার ছাত্রছাত্রীদের শিখিয়েছি। এর জন্য ভারতীয় আধ্যাত্মবোধ ও শ্রদ্ধাবোধ দরকার। তেমনই রকগান আমার ঘরানা নয়।”
যদিও স্তোত্র গাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশও করেছেন উষা উত্থুপ। তিনি বলেন “স্তোত্র গাইতে পারলেও খুব ভাল লাগত। মানুষ ভাবে, আমি রক গান ছাড়া আর কিছু জানি না। আমরা তো কুম্ভমেলাতেও শিবস্তোত্র গেয়েছিলাম। তাই আমাকে স্তোত্র গাইতে বললেও আমি খুব খুশি হব।”