মনোজ মণ্ডল: বেকারত্বের জ্বালায় এর আগেও একাধিকবার এ রাজ্যে নজরে এসেছে একাধিক এমবিএ চা ওয়ালা, কফিওয়ালা, আবার এমবিএ গ্যারেজের কর্মী। এবার বাইক চুরির কিনারা করতে গিয়ে, বারাসাত থানার পুলিসের হাতে পাকড়াও এমবিএ বাইক চোর এবং তার সঙ্গিনী।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর, বারাসাত ল্যারিকা টাউশিপের মধ্যে থেকে বাইক চুরি অভিযোগ দায়ের হয় বারাসাত থানায়। সেই বাইক উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিসের জালে নদিয়ার বুইনচারা পাড়ার বাসিন্দা বছর ২৭ এর যুবক শিবনাথ দাস ও তার পরিচিত মোনালিসা অধিকারী।
পুলিস সূত্রে খবর,বছর খানেক আগে এমবিএ উত্তীর্ণ হওয়ার পর বারাসাতের লরিকা আবাসনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে উইলসম্যাপ নামক একটি কোম্পানি চালাতেন শিবনাথ ও তার সঙ্গী মোনালিসা। তবে সে কোম্পানি বেশিদিন চলেনি। পরবর্তীতে কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলেও পড়াশুনার সুবাদে একসাথেই ওই আবাসনে থাকতেন শিবনাথ ও মোনালিসা। মোনালিসা দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত নারায়নপুর এলাকার একটি বেসরকারি কলেজের ছাত্রী। তবে সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে মেয়ে হওয়ার পরও, এমন সুকৌশলে চুরির ঘটনায় তাজ্জব এলাকাবাসী।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করলে এলাকার স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখে পুলিস জানতে পারে ওই আবাসনের একটি মহিলা মুখে মাস্ক পরে দুজন যুবককে চুরি যাওয়া বাইক চিহ্নিত করে দেন এবং ওই দুই যুবক তার লক ভেঙে গাড়ি নিয়ে চলে যান। এ ধরনের কিছু ডিজিটাল তথ্যের মাধ্যমে পুলিস জানতে পারে ওই দুই যুবক অনলাইন মেকানিক তাদের সঙ্গে শিবনাথ যোগাযোগ করেছিলেন এবং জানিয়েছিলেন লড়িকা টাউনশিপে তার একটি বাইক রয়েছে যার চাবি হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। সেই বাইকটি লক ভেঙে নতুনভাবে মেরামত করে দিতে হবে। দুজন টেকনিশিয়ান আবাসনে পৌঁছলে মোনালিসা তাদেরকে বাইকটি চিহ্নিত করে দেয়। পরবর্তীতে মেরামতির পর সেই বাইকটি শিবনাথের হাতে তুলে দেয়া হলে তা অন্যত্র নিয়ে গিয়ে রাখে শিবনাথ। এরপর গাড়ির আসল মালিক দুদিন পর আবাসনে এসে তার বাইকটি খুঁজে না পাওয়ায়,বাইক চুরির অভিযোগ দায়ের করেন বারাসাত থানায়। চুরির কিনারা করতে তদন্তে উঠে আসা তথ্য গুলিকে কাজে লাগিয়ে গতকাল শিবনাথ ও মোনালিসা কে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরবর্তীতে তাদের গ্রেফতার করে আজ বারাসাত জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃত শিবনাথ ও মোনালিসার ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।