• গায়ক জুবিনের কফিন ঘিরে গুয়াহাটির রাস্তায় ভক্তের ঢল
    বর্তমান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • গুয়াহাটি: রবিবার সকাল। গুয়াহাটির রাস্তায় তখন পা ফেলারও জায়গা নেই। যেদিকে তাকানো যায়, কেবল মানুষ আর মানুষ। জনসমুদ্র। সকলের চোখে জল। মুখ বিষণ্ণ। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন কেউ কেউ। স্বজনহারানোর কান্না। বুক ফাটানো চিৎকার। প্রচণ্ড রোদ, গরম, ভিড়ের মাঝে অস্বস্তি... সবকিছুকে উপেক্ষা করে সকলে মিলে বলে চলেছেন, ‘জয় জুবিন দা’, ‘জুবিন দা ফরএভার’। কানে আসছে জুবিনের পছন্দের একটা অহমিয়া গান। সম্মিলিত কণ্ঠ গাইছে— ‘মায়াবিনী রাতির বুকুত মরোমোর বাসানালে’। বাংলা তরজমা করলে দাঁড়ায়, ‘মায়াবিনী রাতের বুকে, আমার ভালোবাসার আগুনে’। বছর দুয়েক আগেই এক অনুষ্ঠানে জুবিন গর্গ বলেছিলে, ‘আমার মৃত্যু হলে অসমের বুকজুড়ে এই গানটিই বাজবে...।’ কে জানত, মাত্র দু’বছর পরেই অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাবে তাঁর কথা!

    শনিবারই সিঙ্গাপুর হয়ে দিল্লিতে এসেছিল জুবিনের দেহ। রবিবার সকালে বিশেষ ফ্লাইটে তা গুয়াহাটি নিয়ে আসা হয়। বিমানবন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুবিনের স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গ। ঐতিহ্যবাহী ‘গামোছা’ জড়িয়ে দেন শবদেহে। এরপর বিমানবন্দর থেকে কাহিলিপাড়ার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তা ফুলে সাজানো অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। প্রায় সাড়ে পাঁচঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে এগোয় গাড়ি। কারণ বহু মানুষ শেষবারের মতো দেখতে এসেছিলেন শিল্পীকে। প্রবীণ থেকে শিশু, বিশেষভাবে সক্ষম—কে ছিলেন না সেখানে! রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে অনেকে ফুল ছুড়েছেন, প্রার্থনা করেছেন। 

    বিকেলে যখন দেহ সরুসজাই ভোগেশ্বর বড়ুয়া স্টেডিয়ামে পৌঁছয়, তখন প্রবল বর্ষণে চারিদিক ভিজে গিয়েছে। রবিবার সারারাত খোলা থাকবে স্টেডিয়াম। এমনকী, সোমবারও সারাদিন স্টেডিয়ামে রাখা থাকবে দেহ। পরিবার ও সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অনুরাগীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষ হওয়ার পরেই শেষকৃত্য করা হবে। গুয়াহাটির কাছে সোনাপুরের একটি জায়গায় শিল্পীর শেষকৃত্য করা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেই জায়গা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)