নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: দুর্গা পুজোয় দিল্লিতে আমিষ-নিরামিষ বিতর্কে বিজেপির মধ্যেই বিভেদ। দু’সপ্তাহ আগে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে দিল্লির পুজো সেলের কর্তারা একমত হয়েছিলেন যে, আমিষ চলবে। কোনও বাধা নেই। বাঙালির দুর্গা পুজোর প্যান্ডেল-স্টলে ফিসফ্রাই, এগ-চিকেন-মাটন রোল, ডিমের ডেভিল হবে না, তা কী করে হয়! কিন্তু আচমকাই বিতর্ক বাড়িয়েছেন দিল্লির শকুরপুরবস্তির বিজেপি বিধায়ক কর্ণেল সিং। তাঁর ‘ফতোয়া’ নবরাত্রি পর্বে ২২ সেপেটম্বর-২ অক্টোবর বন্ধ রাখতে হবে মাছ-মাংসের দোকান। রেস্তরাঁয় আমিষ বিক্রি চলবে না। তা নাহলে সনাতন বিশ্বাসে আঘাত লাগবে।
যদিও তাঁর সঙ্গে একমত নন বিজেপিরই প্রাক্তন সাংসদ তথা দিল্লি বিজেপির পুজো সেলের অন্যতম উপদেষ্টা লকেট চট্টোপাধ্যায়। দিল্লি পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে দলের হয়ে বৈঠক করেছিলেন তিনিই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাঙালি দুর্গা পুজোয় আমিষ খেলেও ভক্তি এবং বিশ্বাসে বিন্দুমাত্র আঘাত পড়ে না বলেই মত জানিয়েছিলেন। যদিও বিজেপির এই দ্বিমতে দিল্লির পুজো কমিটিগুলো কিছুটা হলেও ফাঁপরে পড়েছে। তারাও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পশ্চিমবঙ্গের মতোই দিল্লিতে সুষ্ঠুভাবে বাঙালির দুর্গা পুজো সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আবেদন করতে চলেছেন।
এমতাবস্থায় আজ থেকে লালকেল্লার সামনের মাঠে শুরু হচ্ছে রামলীলা। গোটা উত্তরভারত জুড়েই নবরাত্রি পর্বে চলে রাম-রাবণ পালার এই রামলীলা। লালকেল্লার সামনে ‘লব কুশ রামলীলা কমিটি’র সভাপতি অর্জুন কুমার জানান, এবার গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরের আদলে তৈরি তিনতলা মঞ্চে হবে অভিনয়। তিনমাস ধরে মথুরা, বারাণসী, রাজস্থান ও গুজরাতের কারিগররা তৈরি করেছেন ১৫০ ফুট দীর্ঘ, ৪৫ ফুট উঁচু সেট। অভিনয় চমকপ্রদকরতে এআই প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হবে।
বিজেপি সাংসদ মনোজ তিওয়ারিকে দেখা যাবে পরশুরামের ভূমিকায়। রাবণ সাজছেন বলিউড অভিনেতা আর্য বব্বর। রাম-লক্ষ্ণণ-সীতার ভূমিকায় কিংশুক বৈদ্য, রাজন শর্মা এবং রিনি আর্য। হনুমান মল্লার পান্ডে। লালকেল্লার সামনে হয়েছে ফটোশ্যুট। ২২ সেপ্টেম্বর রামলীলার মঞ্চে গণেশ পুজো আর রাবণ তপস্যা দিয়ে অভিনয় শুরু। দশেরায় রাবণ বধ। ৩ অক্টোবর একাদশীতে শেষ হবে রামের রাজ্যাভিষেক দিয়ে। আর এই পুরো রামলীলাপর্বে শিল্পীদের নিরামিষ খাওয়ার অনুরোধ করেছেন আয়োজকরা। দুর্গা পুজোই হোক বা রামলীলা, আমিষ-নিরামিষ বিতর্ক ছাড়ছে না দিল্লিতে!