পাহাড়পুরে নিরঞ্জনের সময় মা চণ্ডী দেবীকে আলো হাতে পথ দেখান এলাকার মুসলিমরা
বর্তমান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
উজির আলি, চাঁচল: জিতা অষ্টমীর পরের দিন কৃষ্ণা নবমীর পূণ্য তিথিতে ঘটপুজোর মাধ্যমে রাজ আমলের চণ্ডী দেবীর আরাধনা শুরু হয়েছে চাঁচলে। সদরের পাহাড়পুরে মা চণ্ডী দেবীর দালানে ঘটপুজো শুরু হতেই এলাকায় শারদোত্সব শুরু। সতীঘাট থেকে তামার কলসে জল ভরে চণ্ডীদেবীর দালানে আনার পর দেবীর থানের পাশেই স্থাপন করা হয় মঙ্গলময় ঘট। রীতি মেনে পুজো শুরু করেন রাজ পুরোহিতেরা। কৃষ্ণা নবমী থেকে দশমী পর্যন্ত সন্ধ্যায় চণ্ডীপাঠ ও আরতির মাধ্যমে দেবীর আরাধনা চলে সেখানে। কথিত আছে, সতেরো শতকের শেষ ভাগে উত্তর মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকার রাজা ছিলেন রামচন্দ্র রায় চৌধুরী। বিহারের কিছু অংশ তাঁর রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই প্রজাদরদি রাজার খ্যাতি ছিল পূর্ব ভারত জুড়ে। শোনা যায়, রাজা দেবী চণ্ডীর স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নাদেশে চাঁচলের মহানন্দা নদীতে স্নান করতে গিয়ে তাঁর হাতে উঠে আসে একটি চতুর্ভুজা অষ্টধাতুর মূর্তি। সেটি সতীঘাট থেকে দুই কিমি অদূরে চাঁচল রাজবাড়ীতে এনে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই থেকেই রাজবাড়িতে শুরু হয় চণ্ডী দেবীর নিত্যপুজো। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছু। পরবর্তীকালে চাঁচলের রাজবংশের শেষ রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরীর নির্দেশে তৎকালীন ম্যানেজার সতীরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ি থেকে দু’কিমি দূরে পাহাড়পুরে পাকা মন্দির নির্মাণ করা হয়। সাড়ে তিনশো বছর আগে একসময় যা রাজার পুজো ছিল, এখন তার ভার নিয়েছেন স্থানীয়রা।