• পুজোয় হিলির বিপ্লবী সংঘে দেখা যাবে থাইল্যান্ডের বৌদ্ধমন্দির
    বর্তমান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সুজয় সরকার  হিলি

    থাইল্যান্ডের বৌদ্ধমন্দির দেখা যাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি বিপ্লবী সংঘের দুর্গাপুজোতে। প্রায় ১৫০ ফুট চওড়া ও ৮০ ফুট উচ্চতার বিশালাকৃতির পুজোমণ্ডপটি তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ কাঠ দিয়ে। বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে তৈরি পুজো মণ্ডপে কাঠের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি প্রায় ১৫০০টি বিভিন্ন ধরনের মডেলে বৌদ্ধ শিল্পকলার ও ভাস্কর্য শৈলী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এবার এই ক্লাবের পুজো ৫৭ তম বর্ষে পা দিল। কাঠশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত ও জনপ্রিয় করে তোলার বার্তাকে সামনে রেখে বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব শিল্প উপকরণকেও মণ্ডপসজ্জার কাজে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপ ভাবনায় বৌদ্ধ শিল্প কলা ও ভাস্কর্যকে ফুটিয়ে তুলতে পাহাড়ি মেহগনি সহ বিভিন্ন ধরনের গাছের ফল, বীজ ব্যবহার করা হয়েছে। বালুরঘাটের শিল্পী রঞ্জিত সাহার নেতৃত্বে তিন মাস ধরে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। শিল্পীর দাবি, উত্তরবঙ্গে এধরনের মণ্ডপ এই প্রথম। 

    পুজো কমিটির সম্পাদক পিন্টু সাহা বলেন, প্লাস্টিক ও থার্মোকলের জনপ্রিয়তায় যখন ক্রমশ কাঠের ব্যবহার কমছে, সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে কাঠ শিল্পে উৎসাহিত করতে আমরা এই ধরনের মণ্ডপ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। ক্লাব সদস্যদের দাবি, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় আকর্ষণীয় পুজোগুলির মধ্যে হিলির বিপ্লবী সংঘ বরাবরই চমক থাকে।  এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। 

    থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা ভাবনাতেও রয়েছে অভিনবত্ব। স্থানীয় মৃৎশিল্পী জয়ন্ত পাল প্রতিমা তৈরি করেছেন। দেবী দুর্গা এখানে পুষ্পরথে চড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন। দেবীর দুর্গার রথের সারথি হিসেবে রয়েছেন স্বয়ং মহাদেব। বাহক ইঁদুরের পালকিতে চড়ে এসেছেন গণেশ। এখানে দেবী মুখোমুখি হচ্ছেন তিনটি অসুরের সঙ্গে। দেবীর সঙ্গে যুদ্ধে অসুর ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন।  প্রতিমার পাশাপাশি আলোকসজ্জাতেও থাকছে নতুনত্ব। চন্দননগরের ডিজাইনে তৈরি হয়েছে তিনটি বিশাল আলোকদ্বার। ছোটদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ হিসেব থাকছে বিভিন্ন ডিজিটাল ও মেকানিক্যাল লাইটিং। হিলি বিপ্লবী সংঘের সম্পাদক গণেশ সাহা বলেন, পুজোর পাশাপাশি আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে বছরভর নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যসূচি নিয়ে থাকি। পঞ্চমীতে পুজো মণ্ডপ প্রাঙ্গণে বিশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে ম্যারাথন ও বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কৃত করা হবে।

    ক্লাবের সভাপতি অমূল্য রতন বিশ্বাস জানান, মহালয়ার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  আমাদের ক্লাবের পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। প্রতিমা দর্শনে মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)