নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: অত্যাধুনিক শহর দুর্গাপুর। এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান যে কোনও মহানগরকে টেক্কা দিতে পারে। শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স, রেস্তরাঁ-সবই আছে। এডুকেশন হাব বলে পরিচিত দুর্গাপুরে সরকারি, বেসরকারি নামী স্কুলও রয়েছে। আশপাশের জেলা থেকেও বহু মানুষ শুধু ছেলেমেয়েদের পড়ানোর জন্য দুর্গাপুরে আসেন। কিন্তু শহরে শিশুদের জন্য আধুনিক কোনও পার্ক নেই। এবার এডিডিএ’র হাত ধরে দুর্গাপুরবাসীর দু’দশকের এই আক্ষেপ মিটতে চলেছে।
শনিবার দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটিসেন্টারের ডিয়ার পার্কে পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার আধুনিক শিশু উদ্যানের কাজের শিলান্যাস করেন। যে বিশেষজ্ঞ সংস্থা একাধিক খ্যাতনামা পার্ক তৈরি করেছে, তাদেরই এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়েই প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, যে সংস্থা কলকাতার বড় পার্ক গড়েছে, তারাই এই কাজ করবে। আমাদের যে প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়েছে, তা অনবদ্য।
দুর্গাপুরের ডিয়ার পার্কে একসময় হরিণ থাকত। সাত একর জায়গাজুড়ে এই পার্কের ভিতরে ছিল হরিণ দেখার ভিউ পয়েন্ট। সেতুর উপর থেকে হরিণ দেখতে পেতেন মানুষ। সেতুর নীচ দিয়ে বয়ে যেত জল। এমন সুন্দর পার্কটি প্রায় দু’দশক আগে বন্ধ হয়ে যায়। মূলত আদালতের নির্দেশে ওই সমস্ত হরিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলে ছেড়ে আসতে হয়। তারপর থেকে পার্কটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল।
শহরের বাকি পার্কের অবস্থাও ভালো নয়। লিজ নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ডিএসপির অধীনে থাকা পার্ক কখনও খোলা, কখনও বন্ধ থাকে। বাকি পার্কে শিশুদের নিয়ে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ নেই। শহরবাসীর এই সমস্যার কথা উপলব্ধি করে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। এরপর তারা ডিয়ার পার্কেই শিশু উদ্যান গড়তে উদ্যোগী হয়। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে এলে তিনিই পার্কের নামকরণ করেন, ‘শিশু সাথী, খেলব আমি, শিখব আমি’। এরপর একটি বেসরকারি সংস্থা তাদের সিএসআর তহবিলের টাকায় পার্ক তৈরির প্রতিশ্রুতি দেয়। সেইমতো এদিন কাজের শিলান্যাস হল। অনুষ্ঠানে দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।
এডিডিএ চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন, আশা করছি, কয়েকমাসের মধ্যেই পার্কে শিশুদের কোলাহল শুনতে পাব। মানুষের অনেক দিনের চাহিদা পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে।-নিজস্ব চিত্র