নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: জেলার অন্যতম পর্যটনস্থল ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি। পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে রাজবাড়িতে গাছ-বাড়ি ‘বার্ড ওয়াচিং’ তৈরি করা হয়েছে। রাজবাড়ির ঐতিহ্য সংরক্ষণে নেওয়া হচ্ছে একাধিক পদক্ষেপ।
শহরের পুরাতন ঝাড়গ্রাম এলাকায় রাজবাড়িটি অবস্থিত। রাজবাড়ির সামনে ‘দ্য প্যালেস রিসর্ট’। রাজ্যের মধ্যে চতুর্থ হেরিটেজ বেসিকের স্বীকৃতি মিলেছে। এরপরেই ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ির সংরক্ষণ ও পর্যটক টানতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজবাড়ির ভিতরে গাছ-বাড়ি, বার্ড ওয়াচিং গড়ে তোলা হয়েছে। দ্য প্যালেস রিসর্টের অতিথিরা এখানে অবসর সময় কাটাতে পারবেন। পর্যটকদের কাছে জেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নাচ-গানের আয়োজন করা হচ্ছে। রাজবাড়ির প্রবেশদ্বার দিয়ে ভিতরে ঢুকলে বাঁদিকে রয়েছে আউট হাউস। এই আউট হাউসটি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। আউট হাউসের সামনে ফুলের বাগান। বাগানের ঠিক উত্তরে মূল রাজবাড়ি। বর্তমান রাজবাড়ির কিছুটা দূরে মল্ল রাজাদের মূল গড় ছিল। তার অস্তিত্ব এখন আর নেই। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন ও রাজবাড়ির যৌথ উদ্যোগে অনেক আগেই ‘দ্য প্যালেস রিসর্ট’ চালু করা হয়েছে। হেরিটেজ হোটেলের তকমাও মিলেছিল। ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য এবার ভারতের পর্যটনমন্ত্রকের বেসিক হেরিটেজের স্বীকৃতি মিলেছে। জেলার পর্যটনের মুকুটে যা নতুন পালক। বিদেশে ভারতীয় দূতাবাসে ভারতের ভ্রমণ তালিকায় এবার ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির উল্লেখ থাকবে। রাজবাড়ির জায়গায় ১৫০বছর আগে পোস্ট অফিস তৈরি করা হয়েছিল। রাজবাড়ির তরফে সেটিও ঐতিহাসিক দ্রষ্টব্য স্থান হিসেবে রেখে দেওয়া হবে। দীর্ঘ সময় ধরে রাজবাড়িতে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তি এসেছেন, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
রাজবাড়ির বর্তমান উত্তরপুরুষ বিক্রমাদিত্য মল্লদেব বলেন, হেরিটেজ বেসিকের স্বীকৃতিকে কাজে লাগাতে আমরা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি। পর্যটকরা রাজবাড়ির গাছ-বাড়ি, ‘বার্ড ওয়াচিং’-এ এসে সময় কাটাতে পারবেন। পুরাতন সময়ের জিনিসপত্রগুলি সংরক্ষণ করা হচ্ছে। পর্যটকদের কাছে জেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরতে রায়বেশ, ছৌ-নৃত্য তুলে ধরা হচ্ছে।
ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, গাছ-বাড়ি বিষয়টি অভিনব উদ্যোগ। পর্যটনস্থলে এমন গাছ-বাড়ি তৈরি করলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে। রাজবাড়ির তরফে নতুন এই ভাবনার বাস্তবায়নকে স্বাগত জানাচ্ছি।
বেলপাহাড়ী ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র বিধান দেবনাথ বলেন, উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে গাছের উপর ‘টং’ দেখা যায়। ঝাড়গ্রামে হাতি তাড়াতে গাছের উপর মাচা তৈরি করা হয়। এমন গাছ-বাড়ি তৈরি করলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে বলেই মনে করছি।
ঝাড়গ্রাম পর্যটন দপ্তরের আধিকারিক বিধান ঘোষ বলেন, ঝাড়গ্রাম পর্যটনস্থল হিসেবে বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পর্যটনের প্রসারে প্রশাসন নানাভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।