• লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় পুজো বাম আমলে হিংসা-কবলিত কেশপুরের শীর্ষা গ্রামে
    বর্তমান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: একসময় সিপিএমের দখলে ছিল কেশপুর ব্লকের শীর্ষা গ্রাম পঞ্চায়েতের পারুলিয়া গ্রাম। বাম নেতাদের বিরোধিতা করলে শাস্তির মুখে পড়তে হতো একসময়ের রাজনৈতিক হিংসা কবলিত গ্রামের বাসিন্দাদের। গ্রামের অনেকে ঘরছাড়াও হয়েছিলেন। তবে, বর্তমানে ছবিটা পাল্টেছে। গ্রামে ফিরে এসেছে শান্তি। এবছর সেই গ্রামের মহিলারাই প্রথমবার একত্রে দুর্গাপুজোর আয়োজন করছেন। লক্ষ্মীরভাণ্ডার সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা দিয়ে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। পুজোর প্রস্তুতি জোর কদমে শুরু হয়েছে। সাবেকি ধাঁচে পুজো হবে। পুজোর পাশাপশি গ্রামের কচিকাঁচাদের কথা মাথায় রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হচ্ছে। 

    গ্রামের বাসিন্দা ও পুজোর উদ্যোক্তা মানসী বাগ দলবেরা, নমিতা বাগ, রুমা জানা বলেন, প্রথমবার পুজোর আয়োজন করছি। সকলের আমন্ত্রণ রইল। মহিলারা লক্ষ্মীরভাণ্ডার সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা জমিয়ে রেখেছেন। পুজোতে সেই টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে। আগে এই এলাকায় পুজো না হওয়ায় ছোটদের মনখারাপ হতো। কিন্তু এবছর ওরা এখন থেকেই পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা। কেশপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজা বলেন, পুজোর আয়োজন মহিলারাই করছেন। সকলেই খুব খুশি। কেশপুরের মানুষ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। 

    প্রসঙ্গত, বাম আমলে কেশপুর এলাকায় রাজনৈতিক হানাহানি লেগেই থাকত। খুন ও লুটের রাজনীতির জেরে বহু মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। সেই সময় অনেক পরিবার ঘর ছাড়া হয়েছিল। তবে, সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার বদলের পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বর্তমানে কেশপুর ব্লকে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মহিলা বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। পুজোর কমিটির এক সদস্যর কথায়, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক ভিত মজবুত করেছে। প্রথম বছর পুজোর পাশাপাশি রাবণ পোড়া অনুষ্ঠান হবে। একইসঙ্গে ফল ও ভোগ প্রসাদ বিতরণও করা হবে। মহিলারা পুজোর জন্য একটি কমিটি তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যেই সেই কমিটির সঙ্গে প্রায় ৪০ জন মহিলা যুক্ত হয়েছেন। 

    জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক বলেন, সিপিএমের অত্যাচার ভোলার নয়। একাধিকবার মৃত্যুর হাত থেকেও বেঁচে ফিরেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেশপুরকে স্বাধীন করেছেন। আজকের পুজোর আয়োজন তার প্রমাণ। স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ রায় বলেন, মহিলারাই সমস্ত আয়োজন করছেন। প্রথম বছরেই প্রচুর সংখ্যক মানুষের ভিড় হবে বলে আশাবাদী।
  • Link to this news (বর্তমান)