নিউটাউনে ফের পথ দুর্ঘটনা, মৃত পুলিশ কনস্টেবল, ১৯ দিনে ৪ জনের মৃত্যু
বর্তমান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: নিউটাউনে ফের পথ দুর্ঘটনা! বেপরোয়া বাইকের ধাক্কায় রবিবার রাতে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম যতীশ দেবনাথ (৪০)। তিনি ইকোপার্ক থানায় কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ দিনে নিউটাউনের বিশ্ববাংলা গেট সংলগ্ন এলাকায় চারটি পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। সম্প্রতি দুর্ঘটনা রুখতে নিউটাউন ট্রাফিক গার্ডের তরফে সমস্ত বাস চালক সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষকে নিয়ে সচেতনতামূলক শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি, এদিনের ঘটনা তার বড় প্রমাণ।
জানা গিয়েছে, এদিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ যতীশবাবু সাইকেলে চড়ে ইকো পার্ক ২ নম্বর গেটের কাছে সার্ভিস লেন ধরে যাচ্ছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা এক বাইক চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেলে ধাক্কা মারে। রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। মাথায় গুরুতর চোট লাগে যতীশবাবুর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত চিনার পার্ক লাগোয়া ভিআইপি রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই পুলিশ কর্মী সার্ভিস রোডের একেবারে ধার দিয়ে যাচ্ছিলেন। দ্রুতগতির বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁকে ধাক্কা মারে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ইকোপার্ক ১ নম্বর গেটের কাছে একই রকম পথ দুর্ঘটনায় এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছিল। দুই বান্ধবীকে নিয়ে মারাত্মক গতিতে আসা বাইক চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মেরেছিল। তাদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। এর আগে গত ২ ও ৪ সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। যদিও গত ২ তারিখের দুর্ঘটনা বাইক চালকের দোষে ঘটেনি। সেদিন এক পথচারী লেন ভেঙে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেই সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনা রুখতে লাগাতার সচেতনামূলক প্রচার ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে বিধাননগর কমিশনারেট। তারপরও পথ দুর্ঘটনায় রাশ টানা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। শহরবাসীর অভিযোগ, রাত ও ভোরে নিউটাউনের বিভিন্ন রাস্তা মৃত্যুফাঁদের রূপ নিচ্ছে। প্রশস্ত ঝাঁ চকচকে রাস্তায় জয়রাইডে বের হচ্ছেন একদল যুবক-যুবতী। বাইক ও চারচাকা গাড়িতে তাঁরা গতির ঝড় তুলছেন। বহু বাইকে আবার মডিফায়েড সাইলেন্সার লাগানো। সেই আওয়াজে কানে তালা লাগার দশা। তাছাড়া গাড়ি-বাইকের গতি অত্যন্ত বেশি থাকায় বহু মানুষ আতঙ্কে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। বাসিন্দাদের দাবি, এই সমস্ত বেপরোয়া বাইক ও চারচাকা গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।