আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিত্যদিন স্বামীর সঙ্গে ঝামেলা। শারীরিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতেই ভিন রাজ্যে এসে থাকতে শুরু করেন যুবতী। যদিও একা থাকতেন না। আরও এক যুবকের সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। এর জেরেই যুবতীকে অপহরণ করেন আত্মীয়রাও। তাও আবার সর্বসমক্ষে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের মান্দাসৌরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। শনিবার রাতে গরবা নাচ প্র্যাকটিসের সময় এক যুবতীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় একদল লোক। তাতে মহিলারাও ছিলেন। ঘটনার জেরে সকলেই রীতিমতো চমকে যান।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক মাস আগেই রাজস্থান থেকে মধ্যপ্রদেশের মান্দাসৌরে এসে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন যুবতী। এক যুবকের সঙ্গেই তিনি ওই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তাঁর সঙ্গেই মান্দাসৌরে এসেছিলেন। পরে জানা যায়, যুবতী বিবাহিত। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে থাকতে চান না। পরিবারের থেকে দূরে গিয়ে থাকার জন্যেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আত্মীয়রা।
ঘটনার রাতেই যুবতীর আত্মীয়রা ভাবপর ধর্মশালায় পৌঁছে যান। সেখানেই যুবতী গরবা নাচ প্র্যাকটিস করছিলেন। সকলের সামনেই যুবতীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকী স্থানীয়দের পিস্তল দেখিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়, যাতে কেউ বাধা না দেন। ভয়াবহ ঘটনার পরেই স্থানীয়রা থানায় ফোন করে জানান। তড়িঘড়ি করে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পাশাপাশি ব্যারিকেড দিয়ে ওই রাস্তার রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দুই ঘণ্টা পরেই যুবতীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি এক মহিলা সহ আরও কয়েকজনকে আটক করে তারা। একটি গাড়ি, হুমকি দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত খেলনা পিস্তল হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ আধিকারিক পুষ্পেন্দু সিং রাঠোর জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পারিবারিক ঝামেলার জেরেই
পুলিশ আরও জানিয়েছে, যুবতীর স্বামীর সঙ্গেই ঝামেলা ছিল। নিত্যদিন স্বামী মদ্যপান করতেন। পাশাপাশি মত্ত অবস্থায় যুবতীকে মারধর করতেন। সেই কারণেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে অন্য এক যুবকের সঙ্গে ভিন রাজ্যে এসে ছিলেন তিনি। এর জেরেই অপহরণ করে যুবতীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল আত্মীয়দের।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আরও একটি অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল। প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। তাই তরুণীকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পরেরদিন ঘটল বিপত্তি। বৌভাতের দিন বরের চোখের সামনে নববধূকে অপহরণ করে পালালেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক। যে ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল এলাকায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে। পুলিশের কাছে আশীষ নামের এক যুবক জানিয়েছেন, রোশনি নামের এক তরুণীর সঙ্গে বিদিশা জেলায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পরদিন বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন একসঙ্গে বিউটি পার্লারে সাজতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ফিরেছিলেন এক গাড়িতেই।
অনুষ্ঠান বাড়িতে পৌঁছে আশীষ গাড়ির একদিক থেকে নামেন, অন্যদিক থেকে রোশনি এবং তাঁর বোন নেমেছিলেন। সে সময় হঠাৎ তাঁদের গাড়ির পাশে আরও একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। সেই গাড়ি থেকে নেমে এক যুবক রোশনিকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যান। তাঁকে আটকানোর আগেই গাড়িটি দ্রুত গতিতে চলে যায়।
আশীষ এও জানিয়েছেন, তাঁদের বিয়ের গাড়ির টায়ার পাংচার ছিল। তাই বিয়ের বাসে তাঁরা ফিরছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গোটা ঘটনাটাই রোশনি ও অঙ্কিত নামের এক যুবকের পরিকল্পনামাফিক ঘটানো। বিয়ের গাড়ির টায়ার পাংচার করেছিলেন অঙ্কিত। অঙ্কিত ও রোশনি পাঁচবছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। বিয়ের পরদিন পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দু'জনে মিলে।
জানা গিয়েছে, এই প্রেমের সম্পর্কে আপত্তি ছিল রোশনির পরিবারের। তাই তড়িঘড়ি আশীষের সঙ্গে বিয়ের ঠিক করেছিল। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও, অঙ্কিতের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন রোশনি। আশীষের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।