• দিনেদুপুরে সোনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির পর পায়ে হেঁটেই এলাকা ছাড়ল দুষ্কৃতীরা...
    আজকাল | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার অন্তর্গত মিলন নগর বাজারে সোমবার দুপুরে ঘটল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। দিনের আলোয় বাজারের এক নামী সোনার দোকানে ঢুকে দুষ্কৃতীরা বন্দুক উঁচিয়ে শুরু করে দাপট। দোকানদারকে মারধর করে, হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে তারা। এরপর দোকান থেকে সোনা-গয়না ও নগদ টাকা মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অন্তত ছয়জন দুষ্কৃতী এই ডাকাতিতে যুক্ত ছিল। তাদের মধ্যে তিনজন সরাসরি দোকানের ভিতরে ঢোকে, আর বাকি তিনজন বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দেয়। অবাক করা বিষয়, তারা মোটরবাইক বা গাড়ি নয়, পায়ে হেঁটেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এতে প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, আগে থেকেই ওই এলাকা তাদের রেকি করা ছিল এবং ডাকাতদের পরিকল্পনা যথেষ্ট পাকা ছিল।

    ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা বাজার জুড়ে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। আশপাশের দোকানদাররা ভয়ে শাটার নামিয়ে দেন। খবর পেয়ে তমলুক থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি কোলাঘাট থানার পুলিশও যোগ দেয়। বাজারের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, দুপুরবেলায় জনবহুল বাজারে এভাবে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব আগে কখনও দেখা যায়নি। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় পুলিশের টহলদারি যথেষ্ট ঢিলেঢালা। তাই দুষ্কৃতীরা এতটা দুঃসাহস দেখাতে পারল।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ডাকাতদের খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলিতেও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কোনো সংগঠিত দুষ্কৃতী চক্র এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আবজাল আবরার জানিয়েছেন দুষ্কৃতীদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যে নাকা চেকিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগদ কত টাকা বা সোনার গয়না ঠিক লুট হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। অভিযোগ পেলে আমরা জানাতে পারব। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছেন, দিনের আলোয় যদি এভাবে সশস্ত্র ডাকাতি হতে পারে তবে রাতের অন্ধকারে নিরাপত্তা কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে।

    কিছুদিন আগে নদিয়ার চাকদহ থানার অন্তর্গত লালপুর, চাকদহ বনগাঁ রোডের একটি ব্যাঙ্কে দুই মুখোশধারী দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ব্যাঙ্কের সোনা লুট করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, সন্ধ্যা প্রায় ছ’টা নাগাদ দুই দুষ্কৃতী হঠাৎ ব্যাঙ্কে প্রবেশ করে এবং সদর দরজার শাটার নামিয়ে দেয়। এরপর আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কর্মীদের ভয় দেখিয়ে ব্যাঙ্কের ভিতরে থাকা সমস্ত সোনার গয়না দুটি ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, ব্যাঙ্কটি মূলত বন্ধক রাখা সোনার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করে থাকে। ঘটনার সময় ব্যাঙ্কের ভিতরে চারজন কর্মী উপস্থিত ছিলেন। দুষ্কৃতীরা পালানোর আগে বাইরে থেকে শাটার নামিয়ে দেয়।

    র আগে ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রানাঘাটে একটি গয়নার দোকানে ভর দুপুরে ৬ থেকে ৭ জনের একটি ডাকাত দল কয়েক কোটি টাকার গয়না লুট করেছিল। তবে তখন পুলিশের গুলিতে এক দুষ্কৃতী নিহত হয়। খোঁজ চালিয়ে বাকিদের ধরতে সক্ষম হন স্থানীয়রা। চাকদহের এই ঘটনায় স্থানীয়রা মধ্যেও ভীতির সঞ্চার হয়েছে। তাঁদের মতে, যেভাবে এরকম একটি জনবহুল এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেল তাতে এটাই প্রমাণ হয় দুষ্কৃতীরা কতটা বেপরোয়া! প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একজন দুষ্কৃতী টুপি ও মুখ ঢাকা অবস্থায় স্টেশনের দিক থেকে পায়ে হেঁটে এসেছিল এবং ডাকাতির পর ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকে বাইকে করে পালিয়ে যায়। পুলিশের অনুমান, ডাকাতির আগে দুষ্কৃতীরা এলাকায় ঘুরে সবদিক দেখে গিয়েছিল। 
  • Link to this news (আজকাল)