৫১ লক্ষের বেশি অস্ত্রোপচার, ২৭ হাজার অঙ্গ প্রতিস্থাপন! ৪২তম বছরে ‘অ্যাপোলো’র নয়া অঙ্গীকার
আনন্দবাজার | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
উন্নত এবং অত্যাধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভারতে বিপ্লব ঘটিয়েছে তারা। ১৮৫টি দেশে ২০ কোটি মানুষকে চিকিৎসা প্রদান করে ৪২তম প্রতিষ্ঠা দিবসের আগে মাইলফলক স্পর্শ অ্যাপোলো হাসপাতালের।
১৯৮৩ সালে স্বাস্থ্য পরিষেবায় পথচলা শুরু অ্যাপোলোর। চেন্নাইয়ে তাঁদের প্রথম হাসপাতালটি তৈরি করেন প্রতাপ সি রেড্ডি। বর্তমানে অ্যাপোলো বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্মগুলির একটি, যারা ৭৯টি হাসপাতালে ১০,৪০০-এরও বেশি শয্যা, ৬,৮০০-র বেশি ফার্মেসি, ২,৯০০-র বেশি ক্লিনিক এবং ৫০০-র বেশি টেলিমেডিসিন সেন্টার তৈরি করেছে। বিশ্বের অন্যতম প্রধান কার্ডিয়াক সেন্টার হিসাবে অ্যাপোলো ৩ লক্ষের বেশি অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি এবং ৫ লক্ষেরও বেশি অস্ত্রোপচার করেছে। ৪২তম বর্ষে তাদের অঙ্গীকার, ভাল থেকে আর ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে যাওয়া।
অ্যাপোলোর সূচনার মাধ্যমে ভারতে প্রথম কর্পোরেট হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। তার পর চার দশক কেটেছে। এর মধ্যে ৫১ লক্ষেরও বেশি সার্জারি করেছে অ্যাপোলো। ২৭,০০০ অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকেরা। শুধু চিকিৎসা পরিষেবাই নয়, কর্মক্ষেত্র তৈরিতেও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে অ্যাপোলো। স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। দক্ষ পেশাদার গড়তে অগ্রণী ভূমিকার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার মানের দিকে সমান নজর তাদের। সংস্থার দাবি, কঠিন অসুখ হলে বিদেশই একমাত্র গন্তব্য, এই প্রবণতাকে উল্টে দিয়ে ভারতকে অন্যান্য দেশের কাছে চিকিৎসার গন্তব্য হিসাবে রূপান্তরিত করেছেন তাঁরা। রোগী এবং তাঁদের পরিবারের মধ্যে অ্যাপোলো সম্পর্কে আস্থা গড়ে তুলেছেন।
৪২তম প্রতিষ্ঠা দিবসে অ্যাপোলো হাসপাতাল গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রতাপ বলেন, ‘‘১৯৮৩ সালে অ্যাপোলোর সূচনালগ্ন কেবলমাত্র একটি হাসপাতালের জন্মবর্ষ নয়, একটি বিপ্লবের সূচনা। চার দশকের মধ্যে সেই আন্দোলন আজ ২০ কোটির বেশি জীবন স্পর্শ করেছে। ১৮৫টি দেশের আস্থা অর্জন করেছে এবং সর্বোপরি স্বাস্থ্যসেবায় সম্ভাবনার সংজ্ঞা বদলে দিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশ্বমানের চিকিৎসাকে সকলের জন্য সহজলভ্য ও ভবিষ্যতমুখী করে তোলার দিকে সর্বদা নজর দিয়েছি। আজ বিশ্বমঞ্চে ভারত যখন এগিয়ে চলছে, তখন অ্যাপোলো একটি চালিকাশক্তি হিসাবে হাজির হয়েছে।’’
অ্যাপোলো হাসপাতাল গ্রুপের এগজ়িকিউটিভ ভাইস চেয়ারপার্সন পৃথা রেড্ডি বলেন, ‘‘একটি দেশের শক্তি নিহিত থাকে তার জনগণের সুস্থতার উপর। ভারতের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই নীরব অগ্রগতির স্থপতি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অ্যাপোলোকে আমরা শুধু হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তুলিনি, মানবসম্পদ হিসাবে গড়েছি।’’ ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীতা রেড্ডির বক্তব্যও তা-ই। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সর্বদা লক্ষ্যে স্থির— রোগীর পরিষেবা। স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু উন্নত চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া, ডিজিটাল হেলথ্ থেকে গবেষণা— প্রতিটি পদক্ষেপই গড়েছে আস্থা এবং ভরসা। ভারত যখন ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দুয়ারে, তখন স্বাস্থ্যসেবাই হতে হবে তার সবচেয়ে দৃঢ় ভিত্তি। অ্যাপোলোর লক্ষ্য উচ্চমানের স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে দেশকে যুক্ত করা।’’ বস্তুত, অ্যাপোলো এশিয়ার প্রথম প্রোটন ক্যানসার সেন্টার, ভারতের প্রথম এআই-প্রিসিশন অঙ্কোলজি সেন্টার এবং সাইবার নাইফ রোবোটিক রেডিওসার্জারি সিস্টেম চালু করে চিকিৎসাব্যবস্থার চেহারা পাল্টে দিয়েছে।