দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: পুজোর সময় বেশি রোজগারের আশায় বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে গিয়েছিলেন। সমুদ্রে বিপদ ঘনিয়ে এসেছিল হঠাৎ করেই। লুকনো চরে ধাক্কা লেগে ট্রলারের মধ্যে হুহু করে জল ঢুকতে শুরু করেছিল। কার্যত জীবন বিপন্ন হয়ে গিয়েছিল মৎস্যজীবীদের। শেষপর্যন্ত প্রাণে বাঁচলেন তাঁরা। কোস্টাল পুলিশের সাহায্যে শেষপর্যন্ত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন ৯ মৎস্যজীবী।
রবিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠ থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন ৯ মৎস্যজীবী। এফবি মাসুনা নামে একটি ট্রলারে করে তাঁরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন। জিনজিরা দ্বীপের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই ট্রলার। মৎস্যজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সমুদ্রে যাওয়ার কিছু সময় পরেই ওই দ্বীপের কাছে ট্রলারটি বালির চরে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষ সজোরে হওয়ায় ট্রলারের গায়ে ফাটল দেখা দিয়েছিল। কিছু সময়ের মধ্যেই জল ঢুকতে দেখা যায়।
আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন মৎস্যজীবীরা। ট্রলারের মধ্যে বেশ কিছু কাঁথা ছিল। বিপদ বুঝে তড়িঘড়ি সেসব কাঁথা দিয়ে ফাটল আটকে জল ঢোকা আটকানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু বিপুল জলরাশির চাপে সেসব কার্যত খড়কুটোর মতো। হুহু করে জল ঢুকতে থাকে ট্রলারে। এমনটা চললে জল ঢুকে ট্রলার ডুবতে বেশি সময় লাগবে না। সেই কথা অনুমান করেন তাঁরা। কোনওরকমে কালীব্যায়রা জঙ্গলের ধারে ট্রলারটি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই আশ্রয় নেন তাঁরা।
সেখান থেকেই বাড়ি ও মৈপীঠ উপকূল থানায় খবর পাঠানো হয়। এদিকে রাত হয়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার খবরে প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। মৎস্যজীবী সংগঠনের তরফেও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় বলে খবর। রাতেই তাঁদের উদ্ধারের কাজে নামে কোস্টাল থানার পুলিশ। গভীর রাতে ওই এলাকায় পৌঁছয় পুলিশ। ওই মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করা হয়। গভীর রাতেই তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের দেখে হাঁফ ছাড়েন পরিবারের সদস্যরা ও অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। মৃত্যুমুখ থেকে বেঁচে ফিরে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।