দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: ‘ফুড স্টল’ পিছু দৈনিক ভাড়া ৮০০ টাকা। অভিযোগ, পুজোয় খাবারের দোকান দেওয়ার জন্য আয়োজকদের থেকে এই টাকা ‘দাবি’ করছে বিজেপি পরিচালিত দিল্লি পুরনিগম। এই গুরুতর অভিযোগ তুলছে দিল্লির পুজো উদ্যোক্তাদের একটি বড় অংশ।
উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, পুজোর অনুমোদন কিংবা এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) দেওয়ার পর সেখানে ‘রিমার্কস’ হিসেবে ফুড স্টলের জন্য পৃথকভাবে অনুমতি নেওয়ার কথা লেখা হচ্ছে। খাবারের দোকানগুলিকে সেই অনুমতি পেতে দৈনিক ৮০০ টাকা করে গুনতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই দিল্লি পুর নিগমের এ হেন পদক্ষেপে মাথায় হাত পুজো আয়োজকদের একটি বড় অংশের। তাদের আশঙ্কা, দাবি মতো টাকা মেটাতে হলে পুজোর বাজেট বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। কারণ কোনও পুজো চত্বরেই একটিমাত্র ফুড স্টল থাকে না। প্রতিদিন যদি হাজার হাজার বাড়তি টাকা গুনতে হয়, তাহলে চারদিনে অতিরিক্ত লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে যাবে। বাজেটের বাইরে এত টাকার বোঝা সামলানো প্রায় সব পুজো কমিটির পক্ষেই সমস্যার। এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত তা ভেবে পাচ্ছেন না পুজো উদ্যোক্তারা। আচমকা দিল্লি পুর নিগমের এ হেন খামখেয়ালিপনায়
বেজায় অসন্তুষ্ট আয়োজকদের একাংশ। ইতিমধ্যেই
এই বিষয়ে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী
রেখা গুপ্তাকে চিঠি লিখেছেন আয়োজকরা। সামগ্রিকভাবে বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অভিযোগ, দিল্লিতে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গাপুজোর আয়োজন হচ্ছে। কিন্তু কখনওই শুধুমাত্র ফুড স্টলের জন্য আলাদাভাবে উদ্যোক্তাদের কাছে টাকা দাবি করা হয়নি। সাধারণত যে মাঠ কিংবা গ্রাউন্ডে পুজোর অনুমোদন দেওয়া হয়, তার জন্য একটি ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ করতে হয় উদ্যোক্তাদের। সেই সিকিউরিটি ডিপোজিটের পরিমাণ মাঠের আয়তন ভেদে আলাদা। পুজো মিটলে মাঠ সাফ করার জন্য সিকিউরিটি ডিপোজিট থেকে একটি অংশ কেটে নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বাকি টাকা পুজোর আয়োজকদের ফেরত দেওয়া হয়। পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ বলছেন, ‘মাঠ নেওয়ার পর সেখানে আমি খাবারের দোকান দেব, নাকি ক্রিকেট কোচিং করাব, সেটা আমার সিদ্ধান্ত। তার জন্য পৃথক টাকা দেব কেন?’ পূর্বাঞ্চল বঙ্গীয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মৃণালকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে দিল্লি সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য আমরা আর্জি জানিয়েছি।’ যদিও তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে না দিল্লি পুর নিগম। এমসিডির শাহাদরা সাউথ জোনের চেয়ারম্যান রামকিশোর শর্মা ‘বর্তমান’কে বলেন, ‘ওইসব স্টল থেকে তো বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ হবে না। খাবার বিক্রি করে আয় হবে। ফলে কমার্সিয়াল ক্ষেত্রে ওই ফুড স্টলের ভাড়া দেওয়াই নিয়ম। তবে এক্ষেত্রে পুজোর আয়োজকদের কোনওরকম হেনস্তার শিকার হতে হবে না। নির্দেশিকা প্রত্যাহার না করা হলেও পুজো উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে এই চার্জ যাতে সংগ্রহ না করা হয়, সেটা দেখা হবে। বিজেপি সরকার দুর্গাপুজোয় সবরকম সহযোগিতা করবে।’