সংবাদদাতা, বালুরঘাট: সোমবার সকালে বালুরঘাট শহর সংলগ্ন মালঞ্চায় এক যুবতীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে ওই যুবতী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। প্রথমে যুবতীকে একা পেয়ে অভিযুক্ত অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে ওই যুবক। শুধু তাই নয়, যুবতীর হাত ধরে টানাটানিও করা হয়। এমনকী যৌন নির্যাতনেরও চেষ্টা চালায় অভিযুক্ত।
তবে ওই যুবতী হামলাকারী যুবকের গালে সপাটে চড় কষান। যুবতীর চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এরপরে তাঁরা অভিযুক্ত যুবককে আটক করে গণপিটুনি দেয়। খবর যায় বালুরঘাট থানায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে গ্রেফতার করে। এবিষয়ে বালুরঘাট ডিএসপি (সদর) বিক্রমপ্রসাদ বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ছাত্রী বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ করছেন। তিনি প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। সকালে রাস্তায় লোকজন না থাকায় ওই যুবক সুযোগ বুঝে ছাত্রীর পথ আটকায়। শ্লীলতাহানি করে। ছাত্রীর অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে ওই যুবক তাঁকে অনুসরণ করছিল। তবে যুবতী পাত্তা দেননি। গত শনিবার ওই যুবতী প্রাতঃভ্রমণে বের হলে অভিযুক্ত যুবক পথ আটকে বিরক্ত করে। সেদিন যুবতী প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত ক্ষমা চায়। ক্ষমাও করে দেন সেই যুবতী। ফিরে এসে বিষয়টি পরিবারকেও জানান। সোমবার সকালে ওই যুবক হাত ধরে টানাটানি করলে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় যুবতীর। সাহস করে অভিযুক্তর গালে সপাটে চড় মেরে নিজেকে রক্ষার জন্য চিত্কার করে ওঠেন। যুবতীর কথায়, প্রতিদিনের মতো সোমবারও মর্নিওয়াকে বের হই। জাতীয় সড়ক ধরে যাওয়ার সময় নির্জন এলাকায় ওই যুবক সামনে এসে দাঁড়ায়। এরপর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে। আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের চেষ্টা করে। এরপরই ওই যুবকের গালে চড় মারি।এরপর স্থানীয়রা এসে অভিযুক্তকে আটকে রাখে। পরে পুলিশ নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ বর্মন। তার বাড়ি তপন ব্লকে। সে তপন থেকে কীভাবে বালুরঘাটে এল? বালুরঘাটে এসে প্রতিদিন কেনই বা ওই ছাত্রীর পিছু নিত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ওই যুবতী বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর বলেন, এর আগের দিনও আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ওই যুবক। আমি ওকে চিনি না। প্রথমে ভেবেছিলাম, পাগল। কিন্তু আজ একেবারে আমার হাত ধরে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করায় ভয় পেয়ে গিয়েছি। তবে সম্ভ্রম রক্ষার্থে সাহস করে ওর গালে চড় মেরেছি। যাতে আর কোনও মেয়ের সঙ্গে এমন ব্যবহার করার সাহস না পায়। যুবতীর বাবা বলেন, মেয়ে রোজ সকালে হাঁটতে যায়। আজ এরকম হবে বুঝতে পারিনি। অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করছি।পুজোর মুখে যুবতীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। শ্লীলতাহানির অভিযোগে ধৃতকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।-নিজস্ব চিত্র