• ঘাটাল মহকুমাজুড়ে হাইটেনশন লাইনের নীচে বহু পুজো মণ্ডপ, বিপদের আশঙ্কা
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটাল মহকুমার একাধিক সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি হাইটেনশন লাইনের নীচে কিংবা তার কাছাকাছি মণ্ডপ তৈরি করেছে। ফলে দুর্গাপুজোর ভিড়ের দিনে যেকোনও মুহূর্তে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণহানি, শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের মতো বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের ঘাটাল ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার(টেকনিক্যাল) শেখ সরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা বহু আগে থেকেই সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়েছি। হাইটেনশন লাইনের নীচে বা পাশাপাশি এলাকায় মণ্ডপ না করতে বারবার পুজো কমিটিগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবুও কিছু কমিটি আবেদন অগ্রাহ্য করেছে। এর ফলে পুজোর দিনগুলিতে সামান্য অসাবধানতাই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

    বিদ্যুৎ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, হাইটেনশন লাইনের কাছাকাছি মণ্ডপ করলে ঝুঁকির সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। বৃষ্টির সময় বিদ্যুতের তারে শর্টসার্কিট হলে মুহূর্তে আগুন ধরে যেতে পারে। মণ্ডপের ভিতরে বা বাইরে থাকা দর্শনার্থীদের ভিড়ের মধ্যে তার ছিঁড়ে পড়লে প্রাণহানি অনিবার্য। মণ্ডপ সাজানোর সময় ব্যবহৃত বাঁশ, কাপড় সহ এমন উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে যা আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে। তাছাড়া মণ্ডপ তৈরি করার সময়েও বাঁশ-কাঠ বিদ্যুতের তারে লেগে নানা ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। মহকুমায় প্রায় ১৪টির মতো এই ধরনের বিপজ্জনক এলাকায় মণ্ডপ রয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, পুজো কমিটিগুলি যদি আগে থেকে বিষয়টি জানাত, তাহলে বিকল্প জায়গায় মণ্ডপ করার ব্যবস্থা নেওয়া যেত। প্রয়োজন হলে ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক লাইনে সাময়িকভাবে কভার দেওয়া কিংবা বিদ্যুতের চাপ কিছুটা কমানোর মতো পদক্ষেপও সম্ভব ছিল। কিন্তু এখন যেহেতু মণ্ডপ তৈরি হয়ে গিয়েছে, তাই সতর্কতাই একমাত্র ভরসা। ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বলেন, যে মণ্ডপগুলি সম্পর্কে আমরা জানতে পারছি, তাদের ক্ষেত্রে দপ্তরের ঠিকাদার কর্মীদের পাঠিয়ে তারগুলিকে বিশেষ গার্ড দিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ ও বিদ্যুৎ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের তরফে পুজো কমিটিগুলিকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে হাইটেনশন লাইনের নীচে কোনও অবস্থাতেই ধূপ-প্রদীপ বা বৈদ্যুতিক আলো জ্বালানো না হয়। পাশাপাশি, মণ্ডপের চারপাশে ব্যারিকেড বসিয়ে সাধারণ মানুষের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের জরুরি নম্বর স্পষ্টভাবে টাঙিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উৎসব চলাকালীন টেকনিক্যাল কর্মীদের বিশেষ নজরদারির কথাও জানানো হয়েছে।

    কিছু মণ্ডপ হাইটেনশন লাইনের একেবারে নীচে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাঁদের দাবি, প্রশাসনকে এখনই সক্রিয় হয়ে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। কারণ, অল্প গাফিলতিই আনন্দের উৎসবকে বড়সড় বিপর্যয়ের রূপ দিতে পারে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)