• বাঁধ ভাঙল রাইপুরে ক্যানেলের জল ছাড়া বন্ধ, ধানে ক্ষতির শঙ্কা
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: রাইপুরে ক্যানেলের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মুকুটমণিপুর ড্যাম থেকে জল ছাড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরে রাইপুর ও লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ধানের জমিতে জলসেচে সমস্যার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। কিছুদিনের মধ্যেই ধানগাছে থোড় আসবে। থোড় থেকে ধানের শিষ বের হওয়ার সময় জলের প্রয়োজন হয়। ওইসময় ঠিকমতো জলের জোগান না পেলে ফলনে প্রভাব পড়বে। সেই জন্য অবিলম্বে সেচের জলের দাবিতে চাষিরা সরব হয়েছেন।

    সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, প্রাথমিকভাবে কিছু সমস্যার কারণে বাঁধ মেরামত শুরু করতে দেরি হয়। তবে আমরা তাড়াতাড়ি সেই কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা করছি। এই দফায় ২৬ সেপ্টেম্বর জল সরবরাহ বন্ধ করার কথা ছিল। কিন্তু, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আমরা তার আগেই জল সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। বাঁধ মেরামতের পর কবে জল দেওয়া যাবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। রাইপুরের চাষি শঙ্কর সর্দার, ভুবন মণ্ডল বলেন, বাড়ন্ত ধানগাছে জল না পেলে ফলন মার খাবে। এসময় জমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকা প্রয়োজন। বন্ধুর ভূপ্রকৃতির কারণে এমনিই সব জমিতে ঠিকমতো সেচের জল পৌঁছয় না। তার উপর ক্যানেলে জল সরবরাহ টানা বন্ধ থাকলে সমস্যা হবে।

    চাষিদের অভিযোগ, জলস্ফীতি হলে নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। ক্যানেলে সেই সম্ভাবনা নেই। কারণ সেচদপ্তর নিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ে। তাই শুখা মরশুমে নজরদারি চালালে এভাবে বাঁধ ভেঙে যেত না। দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো দরকার। সেচদপ্তর অবশ্য নজরদারির অভাবের জন্য কর্মীসঙ্কটকেই দায়ী করেছে।

    রাইপুর ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, শ্যামসুন্দরপুর অঞ্চলের তিনটি প্লাবিত গ্রাম থেকে জল নামতে শুরু করেছে। তবে শনিবারও দুর্গতরা বাড়ি ফিরতে পারেননি। এদিনও ত্রাণশিবিরে তাঁদের জন্য রান্না করা খাবার, টিফিন ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়। প্লাবিত এলাকার ৩১টি পরিবারের ১৪১জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়, গ্রন্থাগার ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ক্যানেলের বাঁধ ভেঙে ৪৪০হেক্টর জমির আমন ধান নষ্ট হয়েছে। ওই চাষিরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান, সেজন্য তাঁদের বাংলার শস্যবিমা যোজনার আওতায় আনা হচ্ছে। সেই জন্য শনিবার শ্যামসুন্দরপুরে শিবিরও করা হয়। বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন বলেন, বাড়িঘর পুরোপুরি বসবাসের যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত দুর্গতদের ত্রাণশিবিরে রাখার জন্য ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)