• রঘুনাথগঞ্জে পদ্মার ভাঙনে ৬০ বিঘা জমি
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: পুজোর আগে ভাঙনে রঘুনাথগঞ্জের শেখালিপুরের বেশ কয়েকটি পাকাবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এলাকার চাষিদের প্রায় ৬০বিঘা জমিও নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। মাথার ছাদ হারিয়ে অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন চাষিরা। মাঠে ফসল ও আম-লিচুর গাছ বড় হয়ে উঠেছিল। কিছুদিন পরই ঘরে ফসল তুলতেন চাষিরা। তার আগেই সব জলে গেল। পুজোর আগে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। ঘরবাড়ি, চাষের জমি সবই গিলে খেয়েছে ‘অসুর’ পদ্মা। এবার পুজোয় আর আনন্দে মেতে উঠতে পারবেন না এলাকার বাসিন্দারা। সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

    বিদ্যুৎপ্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান বলেন, এলাকা পরিদর্শন করেছি। সেচ, ভূমি ও কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরাও ছিলেন। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবে এলাকার বাসিন্দারা যাতে আনন্দ করতে পারেন তারজন্য কিছু পোশাক তুলে দিয়েছি। তাঁদের আপাতত শিবিরে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে। তাঁদের সবরকম সাহায্য করা হবে।

    জঙ্গিপুর-লালগোলা রাজ্য সড়ক থেকে নেমে গ্রামের ভিতর দিয়ে চলে গিয়েছে ঢালাই রাস্তা। শেখালিপুর থেকে ঢালাই রাস্তা ধরে দু’কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েই রাধাকৃষ্ণপুর গ্রাম। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। গ্রামের কোল ঘেঁষে লালগোলা হয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে গিয়েছে পদ্মা নদী। নদীর পাড়ে কয়েকশো বিঘা জমিতে চাষ করেন স্থানীয় চাষিরা। এবার জমিতে ফসল ফলিয়েছিলেন। পটল, বেগুন ও কপি চাষ হয়েছিল। প্রায় ১০ বিঘা আম-নিচুর বাগানও ছিল। স্থানীয় চাষি বাদলচন্দ্র সিংহ বলেন, আম ও লিচুর বাগান তলিয়ে গিয়েছে। এলাকার রতন মণ্ডল বলেন, তিন বিঘা জমিতে বেগুন ও পটল চাষ করেছিলাম। অর্ধেকের বেশি নদীতে চলে গিয়েছে। আমরা সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। 

    প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভোররাত থেকে পদ্মানদীতে আচমকাই ভাঙন শুরু হয়। নিমেষেই চাষের জমি প্রায় ১৬টি বাড়ি নদীতে ভেসে গিয়েছে। কোনওরকমে প্রাণ হাতে করে ঘর থেকে মানুষজন বেরিয়ে আসেন। চাষের জমি, আম, কাঠাল, নিম ও বাঁশঝাড় নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। আতঙ্কে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে নিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ভাঙন এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে ব্লক প্রশাসন। তাঁদের স্থানীয় রাধাকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্কুলে অস্থায়ী শিবিরে রাখা হয়েছে। 

    রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা অমৃতকুমার হাঁসদা বলেন, এখনও পর্যন্ত ৬০বিঘা চাষের জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। আম, লিচু সহ পটল, বেগুন, কপি চাষ করেছিলেন চাষিরা। এলাকার ২৫৪জন কৃষক সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে। তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া 

    হয়েছে। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)