পুলিশকর্মীদের উপর হামলার ঘটনা, লালগোলার তারানগরে ধৃত ২, ব্যাপক তল্লাশি
বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, লালবাগ: রবিবার সন্ধ্যায় লালগোলা থানার তারানগরে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অচিন্ত্য ঘোষ ও লালন ঘোষ। তাদের বাড়ি তারানগরে। সোমবার ধৃতদের লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। ভগবানগোলার এসডিপিও বিমান হালদার বলেন, তারানগরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মার ভাঙন চলছে। রবিবার বিকেলে বেশ কয়েকজন মানুষ ভাঙনপ্রবণ এলাকায় জমায়েত হয়েছিল। ভাঙন অব্যাহত থাকায় এলাকাজুড়ে ধস নেমে যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। সেই কারণে পুলিশ গিয়ে জমায়েত সরাতে শুরু করে। তখন কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। একটি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভাঙচুর করে। ঘটনায় ১৫ জন সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। রবিবার সন্ধ্যার ঘটনার পর থেকে পুলিশের টহলদারি চলছে। পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক রয়েছে।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে লালগোলার তারানগরে পদ্মার ভাঙন চলছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু ঘরবাড়ি, কয়েক বিঘা চাষের জমি, আম-লিচুর বাগান এবং গাছপালা নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। একাধিক বাড়ি নদীর পাড়ে ঝুলছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি তারানগর প্রাইমারি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙনের আতঙ্কে অনেকে নিজেরাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি ঘরবাড়ি ভেঙে দরজা, জানালা অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। তারানগরের পর গত বুধবার ভোর থেকে রঘুনাথগঞ্জ থানার শেখালিপুর পঞ্চায়েতের রাধাকৃষ্ণপুরে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। ওইদিন দুপুর পর্যন্ত ১৪টি বাড়ি, একটি দোকান, ১৫বিঘা চাষের জমি সহ গাছপালা পদ্মার গর্ভে চলে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি রাধাকৃষ্ণপুর বাপুজি প্রাইমারি স্কুলে ঠাঁই নিয়েছে।
এদিকে নদী ভাঙন যেন কিছু সংখ্যক মানুষের কাছে বিনোদনের খোরাক হয়ে উঠেছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও মহিলারা তারানগর ও রাধাকৃষ্ণপুরে ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ কেউ ভাঙনপ্রবণ বিপজ্জনক নদী পাড়ে দাঁড়িয়ে রিলস বানাচ্ছেন। এই জমায়েত ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকার আতঙ্কিত বাসিন্দাদের কাছে বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। রাধাকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা শ্যামল ঘোষ বলেন, ভাঙন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন দলে দলে মানুষ আসছে। প্রচুর সংখ্যায় বহিরাগত মানুষের জমায়েতের ফলে মালপত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় তারানগরে ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকার জমায়েত সরাতে গেলে পুলিশ আক্রান্ত হয়। -নিজস্ব চিত্র