• পুজোর মুখে উচ্ছেদের নোটিশ বিশ্বভারতীর, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পিনাকী ধোলে, বোলপুর: পুজোর মুখে উচ্ছেদের নোটিশ পেয়ে ঘুম উড়েছে শান্তিনিকেতন থানার আশেপাশের রাস্তার ধারের অস্থায়ী দোকানদারদের। বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের ইন্টারন্যাশনাল গেস্ট হাউস থেকে যে রাস্তাটি শান্তিনিকেতন থানা, পদ্মা ভবন, ভাষা ভবন হয়ে ফায়ার ব্রিগেড পর্যন্ত যাচ্ছে, সেই রাস্তার উপর সমস্ত দোকানদারদের সাত দিনের মধ্যে উঠে যেতে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ওই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সেই অনুযায়ী আগামী বুধবারই শেষ হচ্ছে বিশ্বভারতীর বেঁধে দেওয়া সময়সীমা। 

    শান্তিনিকেতন থানার অদূরেই একটি অস্থায়ী দোকান রয়েছে ষাটোর্ধ্ব কংগ্রেস তুড়ির। ঘুগনি, মুড়ি, চা, বিস্কুট, ইত্যাদি বিক্রি করেন। খদ্দের বলতে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও পুলিশ কর্মীরা। বিক্রিবাটা করে দিনের শেষে যা আয় হয়, তাই দিয়েই চলে সংসার। উঠে আসে ওষুধের খরচ। হঠাৎ উচ্ছেদের নোটিশ পেয়ে দু’ চোখের পাতা এক করতে পারছেন না কংগ্রেসবাবু। তিনি বলছিলেন, নোটিশটা দেখা মাত্রই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। মনে হচ্ছিল হার্টফেল করে মরে যাব। চোখের জল ধরে রাখতে পারছিলাম না। বৃদ্ধ বলেন, প্রায় ৩৩ বছর ধরে ব্যবসা করছি। এর আগে মেলার মাঠের কাছে দোকান ছিল। কিন্তু সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়ার পর এখানে এসে অস্থায়ী দোকান করেছি। পুজোর আগে যদি উচ্ছেদ করে দেয়, তাহলে খাব কী? বাঁচবই বা কী করে? আমাদের বুড়ো-বুড়ির মাসে ওষুধ খরচই তো প্রায় চার হাজার টাকা। সেই টাকা জোগাড় হবে কী করে? 

    স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকায় প্রায় ১২ জন ব্যবসায়ী এই নোটিশ পেয়েছেন। সেরকমই এক ব্যবসায়ী মহম্মদ আনোয়ার বলেন, এই দোকানটাই আমার একমাত্র সম্বল। দোকান চালিয়েই ছেলেমেয়ের মুখে দু’ মুঠো অন্ন তুলে দিতে পারি। এখন যদি হঠাৎ করে উঠে যেতে বলে তাহলে কীভাবে চলবে? বিশু পড়িয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছি। এভাবে উচ্ছেদ করে দেওয়া তো ঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, বিশ্বভারতীর জায়গা দীর্ঘদিন ধরে ওই সমস্ত দোকানদাররা জবরদখল করে বসে রয়েছে। যত্রতত্র নোংরা আবর্জনা ফেলছে। রাস্তাটিও সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে।  সেই কারণেই দোকানদারদের সরে যেতে বলা হয়েছে। বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, ওই জায়গাটি খালি করার ব্যাপারে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ভাবনাচিন্তা করছিলাম। পুলিশ, প্রশাসন ও পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতিগবাবুর দাবি, পুজোর আগে উচ্ছেদে যে ব্যবসায়ীদের উপর বিশেষ প্রভাব পড়বে এরকমটা নয়। কারণ ওই এলাকায় সেরকম পুজো হয় না। তাছাড়া, পুজোর সময়ে বিশ্বভারতী ছুটি থাকে। দোকানদারদের অনুরোধ করব, তাঁরা যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এলাকাটি খালি করে 

    দেন।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)