কিশোর অর্পণের তৈরি ৩ ফুটের দুর্গা পূজিত হবে নলহাটির পাড়ার মণ্ডপে
বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: খুব ছোটবেলায় স্কুল থেকে ফেরার পথে অবাক বিস্ময়ে শিল্পীর প্রতিমা তৈরি দেখত সে। সেই থেকেই মূর্তি তৈরির নেশা পেয়ে বসে। এবার দুর্গাপ্রতিমা বানিয়ে তাক লাগাল নলহাটির কিশোর অর্পণ প্রামাণিক। সিমলান্দি গ্রামের শিল্পী অর্পণ এখন প্রতিমায় শেষ তুলির টান দিতে ব্যস্ত। তার কাজের প্রশংসা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামের ক্লাবের পুজো মণ্ডপে এবার তারই তৈরি দুর্গা পূজিত হবে।
বছর ১৩-র অর্পণ ভদ্রপুর মহারাজ নন্দকুমার হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকেই তার নেশা মাটির প্রতিমা তৈরি করা। এর আগে অর্পণ সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছিল। এবারই প্রথম তিন ফুটের দুর্গাপ্রতিমা বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ছেলের এই কাজে উৎসাহ দেন বাবা ও মা।
নিয়ম অনুযায়ী রথযাত্রার দিন প্রতিমার কাঠামো তৈরির কাজ শুরু করে অর্পণ। এরপর কাঠামোর গায়ে মাটি দেয়। ধাপে ধাপে তার হাতে দশভুজার মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরি হয়েছে। শুধু দেবী দুর্গা নন, একচালার মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক, অসুর, সিংহ সবই। এত অল্প বয়সে দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে সকলকে মুগ্ধ করেছে অর্পণ। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রতিবেশীরা। বাবা পেশায় চাষি অরূপরঞ্জন প্রামাণিক বলেন, আমাদের পরিবারের কেউ মৃৎশিল্পী নয়। ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ক্লাবের সরস্বতী, দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করা দেখতে যেত। এছাড়া মোবাইলে থিমের সঙ্গে নানা ধরনের প্রতিমা তৈরির ভিডিও দেখা ওর নেশা। অর্পণ বলে, ছোট থেকেই পাড়ার ক্লাবে শিল্পীর প্রতিমা বানানো দেখে আসছি। সেখান থেকেই আগ্রহ তৈরি হয়। পরে মোবাইলে প্রতিমা তৈরির ভিডিও দেখে কাজ শুরু করি। খুব ভালো লাগে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকি।
প্রথমে ছেলের তৈরি দুর্গাপ্রতিমা বাড়িতেই পুজো করা হবে বলে ভেবেছিলেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু, এলাকায় পুরোহিতের খুব আকাল। তাছাড়া দুর্গাপুজোয় অনেক নিয়মনিষ্ঠা রয়েছে। অবশেষে ঠিক হয় গ্রামের ক্লাবের পুজো মণ্ডপেই তার প্রতিমার পুজো দেবেন এলাকার বাসিন্দারা। ছেলের কাজে খুশি মা। অরূপবাবু বলেন, ছেলে বড় হয়ে যদি প্রতিমা তৈরিকেই পেশা হিসেবে বেছে নেয় তাতে বাধা দেব না। অর্পণ বলে, প্রতিমা তৈরি আমার নেশা। বড় হয়ে ভালো শিল্পী হতে চাই।