ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানি, শিক্ষককে গণধোলাই রামপুরহাটে
বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাটে এক কলেজ ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার ও তার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক পার্ট টাইম টিচারের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে বছর পঞ্চাশের ওই শিক্ষককে গণধোলাই দিল ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ এসে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম অভিজিৎ পাল। বাড়ি মল্লারপুরের বড়তুড়ি গ্রামে। ২০১৮ সালে বড়তুড়ি গ্রামের হাইস্কুলে পার্ট টাইম টিচার হিসাবে যোগ দেন। সপ্তাহে তিনদিন তিনি উচ্চ মাধ্যমিকের দর্শন বিষয়ের ক্লাস নিতেন। পাশাপাশি তিনি ওই এলাকা ছাড়াও রামপুরহাটে গৃহশিক্ষকতা করেন। অভিযোগ, ওই স্কুলেরই উচ্চ মাধ্যমিকের এক ছাত্রীকে বাড়িতে পড়াতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করতেন ও শরীরে হাত দিতেন। বছর উনিশের ওই ছাত্রী এখন বর্ধমানের একটি কলেজে ভূগোল অর্নাস পড়ছেন। এখনও তাকে ফোন করে উত্যক্ত করে চলেছেন ওই শিক্ষক বলে অভিযোগ। পরিবারের সদস্যরা বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মাস দুয়েক আগে থেকে ওই শিক্ষক ছাত্রীর বাড়িতে পড়াতে আসতেন। ছাত্রীর জামাইবাবু বলেন, বাড়িতে আলাদা ঘরে পড়াতেন ওই শিক্ষক। সেই সুযোগে ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের পাশাপাশি শরীরে হাত দিতেন। ভয়ে ও লজ্জায় ওই ছাত্রী বাড়িতে কিছুই জানাননি। কিন্তু স্কুল ছেড়ে কলেজে ভর্তি হওয়ার পরও এই শিক্ষক তাঁকে ফোন করে কুপ্রস্তাব দিচ্ছেন। সম্প্রতি রামপুরহাটে এক শিক্ষকের হাতে নাবালিকা ছাত্রী নৃশংসভাবে খুন হয়েছে। তার সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে এই আশঙ্কায় রবিবার সাহস করে ছাত্রীটি পরিবারে ঘটনার কথা জানান।
এরপরই পরিবারের লোকজন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই শিক্ষক সপ্তাহে চারদিন বড়তুড়িগ্রাম ও তিনদিন রামপুরহাটে গৃহশিক্ষকতা করেন। এদিন রামপুরহাটে পড়াতে এসেছিলেন ওই শিক্ষক। পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীটিকে নিয়ে রামপুরহাটে আসেন। ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষককে ফোন করে শহরের ছফুঁকো এলাকায় ডাকা হয়। ওই শিক্ষক আসতেই কেন তাঁদের মেয়ের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে প্রশ্ন করলে, ওই শিক্ষক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় জমান। এরপরই পরিবার ও স্থানীয় মানুষ ওই শিক্ষককে ধরে ধোলাই দিতে শুরু করে। কখনও কান ধরে, কখনও ক্ষমা চেয়ে নিস্তার পাওয়ার চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক জয়দেব মণ্ডল বলেন, পার্ট টাইম ওই শিক্ষক সপ্তাহে তিনদিন স্কুলে আসতেন। তাঁর আচরণে অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি। অভিভাবকরাও কোনও অভিযোগ জানাননি।