• কসবায় ৬ বছরের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনে বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কসবায় ছ’বছরের কন্যাকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। সোমবার আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিম্পা রায় এই আদেশ দিয়েছেন। বিচারক ওই সাজার সঙ্গে এক লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর হাজতবাসের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের ম঩ধ্যে নির্যাতিতাকে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য লিগ্যাল এইডকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার আগে দোষী সাব্যস্ত প্রৌঢ় আদালতে কম সাজার পক্ষে সওয়াল করে। যদিও মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সুব্রতা কর তার জোরালো আপত্তি জানান। তিনি বলেন, ‘সন্তান হল বাবার কাছে অতি স্নেহের। সেখানে একজন বাবা যেভাবে নিজের ছোট্ট কন্যার উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে। তাতে আমাদের আস্থা ও ভরসায় চরম আঘাত করেছে। তাই তার চরম সাজা হওয়াটাই জরুরি।’ এরপরই বিচারক অপরাধীর উদ্দেশে বলেন, আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই আপনাকে এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হল। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে অপরাধী।

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়। আলিপুর আদালতে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয় শিশুকন্যা ও তার মা। এমনকী  মূল মামলার বিচার চলাকালে আদালতে অভিযুক্ত বাবাকে শনাক্ত করে ছয় বছরের কন্যা। তার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যেই এদিন বাবার সাজা হল বলে আদালত সূত্রের খবর। সরকারি আইনজীবী জানান, এই মামলায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে পুলিশ চার্জশিট পেশ করে। আদালত ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে শুরু করে মূল মামলার বিচার। মোট সাতজন সাক্ষ্য দেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি শিবনাথ অধিকারী এদিন সাংবাদিকদের  বলেন, ‘আদালত যে রায় দিয়েছে, তাতে সরকার পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করছে। বাচ্ছা মেয়েটি যেভাবে বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে, তা সত্যিই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।’ যদিও রায় ঘোষণার পর এদিন পুলিশ লকআপে নিয়ে যায়ার পথে প্রৌঢ় বলতে থাকে, ‘সব শেষ হয়ে গেল। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল কে জানে।’
  • Link to this news (বর্তমান)