• দেশের সবচেয়ে কম দুর্ঘটনাপ্রবণ শহর কলকাতা, পরিসংখ্যান তুলে দাবি লালবাজারের
    প্রতিদিন | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: দেশের সব থেকে কম দুর্ঘটনাপ্রবণ কলকাতা। তুলনায় দিল্লি, মুম্বই-সহ দেশের প্রত্যেকটি বড় শহরে দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় আহত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই বেশি। লালবাজারের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। এই ব্যাপারে এক ট্রাফিক কর্তা জানান, রাজ্য সরকারের ‘সেফ ড্রাইভ সেভলাইফ’ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলায় সচেতনতার অভিযান চালিয়েছে রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের কর্তারা। এর ফলে পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা-সহ রাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে।

    লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, দেশের অন্য পাঁচটি বড় শহরের পথ দুর্ঘটনার সঙ্গে তুলনায় দেখা গিয়েছে, পথদুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সবার প্রথমে দিল্লি।। গত বছরে কলকাতায় ১৮৮টি পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৯১। সেখানে দিল্লিতে ১৫০৪টি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৫১ জনের। এর পরই রয়েছে বেঙ্গালুরু। গত বছর বেঙ্গালুরুতে ৮৬৯টি পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮৯৪। সেখানে চেন্নাইয়ে ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় ৫৪৪ জন, মুম্বইয়ে ৩৮৪টি দুর্ঘটনায় ৩৭০ জন, হায়দরাবাদে ২৮৬ টি পথদুর্ঘটনায় ৩০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবার পথদুর্ঘটনায় আহতের ক্ষেত্রেও পরিসংখ্যান অনেকটা একইরকম। গত বছর দিল্লিতে ৪১৫৩টি পথদুর্ঘটনায় ৫২২৪ জন আহত হন। বেঙ্গালুরুতে ৩৯০০টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪০২২ জন। এ ছাড়াও চেন্নাইয়ে ৩২৩৩টি পথদুর্ঘটনায় ৩৮৮৮ জন, মুম্বইয়ে ২২৫৬টি দুর্ঘটনায় ২৭২৩ জন, হায়দরাবাদে ৩৪৯৯টি পথ দুর্ঘটনায় ৩৩৯৩ জন আহত হয়েছেন।

    কলকাতার ক্ষেত্রে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর গ্রাফ নিম্নগামী। ২০১৯ সালে যেখানে শহরে দুর্ঘটনায় ২৬৭ জনের মৃত্যু হয়, সেখানে ২০২৩ সালে মৃত্যুর সংখ্যা কমে হয় ১৫৯। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এলাকা কলকাতা পুলিশে যুক্ত হয়। ভাঙড়ে তৈরি হয় কলকাতা পুলিশের নতুন ডিভিশন ও ট্রাফিক গার্ড। ওই অঞ্চলের পথ দুর্ঘটনাও কলকাতা পুলিশের পরিসংখ্যানে যুক্ত হয়। ফলে গত বছর দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয় ১৯১। তবে ২০২৩ সালের থেকে দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির সংখ্যা গত বছর কমে যায়। ২০২৩ সালে যেখানে আহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১৭৫৪, সেখানে গত বছর আহত ব্যক্তির সংখ্যা কমে হয় ১৭২৪।

    লালবাজারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর শহরে দুর্ঘটনায় ১৯১ জন মৃতের মধ্যে পথচারীর সংখ্যাই বেশি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৭৯ জন পথচারীর। এ ছাড়াও বাইক ও স্কুটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের। এর মধ্যে ৫৪ জন বাইক ও স্কুটি চালক এবং ২১ জন চালকের পিছনে ছিলেন। বর্ষাকালে রাস্তা পিছল ও খারাপ হওয়ার কারণে পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বলে দেখা গিয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে ২০ জন, আগস্টে ১১ জন ও সেপ্টেম্বরে ২১ জনের মৃত্যু হয়। আবার দৃশ্যমানতার অভাবের কারণে জানুয়ারিতে ১৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৩ জন, নভেম্বরে ১৭ জন, ডিসেম্বরে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)