ভেজা বাতিস্তম্ভে ছোঁয়া লাগতেই প্রাণ হারালেন ফলবিক্রেতা! জলমগ্ন কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যু
আনন্দবাজার | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুর্যোগের সকালে কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যুর খবর মিলছে। মঙ্গলবার সকালে একবালপুরের হোসেন শাহ রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের। পাশাপাশি নেতাজিনগর এবং বেনিয়াপুকুরেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। গড়িয়াহাটেও এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। গড়ফাতেও এক সাইকেল আরোহীর দেহ উদ্ধার হয়েছে।
নেতাজিনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ফলের দোকান রয়েছে কলকাতার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রশান্ত কুন্ডুর। অন্য দিনের মতো মঙ্গলবার সকালেও দোকান খুলতে নেতাজিনগর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছোন তিনি। সাইকেলে চেপে সেখানে যান তিনি। বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাতিস্তম্ভের গায়ে সাইকেলটি হেলান দিয়ে রাখতে যান। সেই সময়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নেতাজিনগরের ওই ঘটনার প্রসঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এনএসসি বোস রোডে জল দাঁড়াবে, আমি আমার জন্ম থেকে দেখিনি। কলকাতার যা ধারণক্ষমতা, তার চেয়ে দশ গুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আমরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চেষ্টা করছি যাতে এই অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি পান।”
মঙ্গলবার সকালে একবালপুর থানা এলাকার হোসেন শাহ রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় জীতেন্দ্র সিংহ নামে ৬০ বছর বয়সি এক প্রৌঢ়ের। ভোর ৫টা নাগাদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। পরে তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ছাড়া বেনিয়াপুকুরেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক জনের। গড়িয়াহাট এবং গড়ফাতেও জল জমা এলাকা থেকেও এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে কী কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সোমবার রাত থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে কলকাতা এবং শহরতলিতে। একটানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। উত্তর থেকে দক্ষিণ— গোটা শহরেই একই পরিস্থিতি। বিভিন্ন গলিপথও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমেছে। বহু বাড়ি ও গাড়ি জলের নীচে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব রাস্তায় আগে কখনও জল জমেনি, সেই রাস্তাও জলের তলায়। এই সব এলাকা থেকে জল বার করার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। তবে যেহেতু দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, তাই জল নামতে দেরি হচ্ছে।