আবারও নাতনি! নাতির আশা না মেটায় চরম পদক্ষেপ ঠাকুমার, ৪ মাসের শিশুকন্যার শ্বাসরোধ করে খুন
আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছেলের আবারও মেয়ে হল! পরপর দুই কন্যাসন্তানের জন্মের পর মনে মনে ক্ষুব্ধ ছিল ঠাকুমা। বৃদ্ধা নাতির আশা করেছিল। আশা পূরণ না হওয়ায় চার মাসের নাতনিকেই খুন করল। সবার অলক্ষ্যে নাতনির শ্বাসরোধ করে খুনের কথা সে নিজেই স্বীকার করে নিয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের নর্মদাপুরম জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বারখেদি গ্রামেই এক বৃদ্ধা তার চার মাসে নাতনিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। নাতনিকে তার পছন্দ ছিল না। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন সংসারে নাতি আসুক। সেই কারণেই নাতনিকে খুন করেন বৃদ্ধা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধার নাম মীনাবাই আসওয়ারে। গত শুক্রবার বাড়ির পিছনে দোলনায় ঘুমিয়ে পড়েছিল চার মাসে শিশুকন্যা। ঘুমন্ত শিশুকন্যার মুখে তোয়ালে চেপে ধরে বৃদ্ধা শ্বাসরোধ করে খুন করে। সেই সময়েই শিশুকন্যার মা ঘরের ভিতরে কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
শিশুকন্যাকে খুনের পর ওই বৃদ্ধা একটি ব্যাগের মধ্যে দেহ ভরে, শুকনো কুয়োয় ফেলে দেয়। কিছুক্ষণ পরেই শিশুকন্যার নিখোঁজের খবরে গ্রামে শোরগোল পড়ে। তড়িঘড়ি পরে পরিবার ও গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। শিশুকন্যাকে খোঁজাখুঁজির সময়েই তার ঠাকুরদা কুয়োর মধ্যে একটি ব্যাগ দেখতে পান। কিন্তু সেই সময় বৃদ্ধা তার স্বামীকে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সে জানায়, ওই ব্যাগে মাসিকের নোংরা কাপড় রাখা আছে।
তিনদিন পর সেই কুয়ো থেকে ব্যাগটি উদ্ধার করে শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে মৃত শিশুকন্যার বাবা জানিয়েছেন, খুনের তিনদিন পর বৃদ্ধা খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছে। তিনিও কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশি জেরায় বৃদ্ধা খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। সে আরও জানায়, পরিবারে দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের আগমনের পর সে খুশি ছিল না। মন থেকে নাতনিকেও মেনে নিতে পারেনি। সে চেয়েছিল, ছেলের দ্বিতীয় সন্তান ছেলে হোক।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল পাঞ্জাবে। একের পর এক বিয়ে যুবতীর। কোনও বিয়েই টিকল না বেশিদিন। কারণ, কারও থেকেই মনের মতো যৌনসুখ পাননি। অবশেষে জড়িয়ে পড়েন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে। প্রেমের টানে ঘর ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এদিকে পিছুটান ছিল একমাত্র সদ্যোজাত কন্যাসন্তান।
দীর্ঘ পরিকল্পনার পর বাড়িতে বাবা, মায়ের কাছে সদ্যোজাত সন্তানকে রেখেই প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান যুবতী। তাঁর ধারণা, বাবা, মা নিশ্চয়ই মেয়ের ঠিকমতো দেখভাল করবেন। কিন্তু দিন কয়েক পরেই কোলের সন্তানের চরম পরিণতির কথা শুনে শিউরে উঠলেন। সদ্যোজাত নাতনির দেখভাল তো দূরের কথা, তার মায়ের উপর বিরক্ত হয়ে, মাত্র ছয় মাস বয়সি নাতনিকে খুন করল দাদু ও দিদিমা। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছে। যা ঘিরে এলাকাতেও ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলায়। জলন্ধরের পুলিশ আধিকারিক সর্বজিৎ সিং রাই জানিয়েছেন, ছয় মাসের সদ্যোজাত কন্যাকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তার দাদু ও দিদিমার বিরুদ্ধে। কারণ, সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের মায়ের কুকীর্তি সহ্য করতে পারেনি তাঁর পরিবার। মায়ের কুকীর্তির জেরে চরম পরিণতি হল ছয় মাসের কন্যাসন্তানের।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, যুবতী এর আগে তিনবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু কোনও বারেই সংসারে টিকে থাকতে পারেননি। তৃতীয়বার বিয়ের পরেও সুখী ছিলেন না যুবতী। তিনবার বিয়ের পরেও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কন্যাসন্তানের জন্মের পরেই নতুন প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান তিনি। পালিয়ে যাওয়ার আগে নিজের বাড়িতেই বাবা, মায়ের কাছে কন্যাসন্তানকে রেখে দিয়ে গিয়েছিলেন। যুবতীর ধারণা ছিল, তাঁর অবর্তমানে মেয়ের যত্ন নেবেন বাবা, মা। মেয়েকে মানুষ করে তুলবেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে ঘটল তার উল্টোটা।
মায়ের অনুপস্থিতিতে দিনরাত কান্নাকাটি করত শিশুকন্যা। তাকে সামলাতে হিমশিম খেতেন বৃদ্ধ দাদু ও দিদিমা। নাতনির কান্না আর সহ্য করতে পারছিলেন না তাঁরা। অবশেষে রাগের মাথায় সদ্যোজাত নাতনিকে খুন করেন বৃদ্ধ দম্পতি। শ্বাসরোধ করে নাতনিকে খুন করেন তাঁরা। এরপর ওই এলাকায় হাইওয়ের ধারে এক কালভার্টের মধ্যে নাতনির নিথর দেহ ছুড়ে ফেলে, দুজনেই পালিয়ে যান।
বৃদ্ধ দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ পুলিশি জেরায় নাতনিকে খুনের ঘটনাটি তাঁরা দুজনেই স্বীকার করে নেন। কোথায় দেহটি ফেলে দিয়েছিলেন, তাও জানিয়ে দেন। সেই ঘটনাস্থল থেকে সদ্যোজাত কন্যার নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় পরবর্তীতে।
পুলিশ আধিকারিক সর্বজিৎ সিং রাই আরও জানিয়েছেন, ছয় মাসের নাতনিকে খুনের ঘটনায় তার দাদু ও দিদিমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। শিশুকন্যার মাকেও এই ঘটনায় জেরা করবে পুলিশ। কী কারণে কন্যাসন্তানকে রেখে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন, নাতনিকে খুনের নেপথ্যে আর কী কী কারণ রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।