মানস বিশ্বাস: বিধাননগর পৌরনিগম এলাকার বাগুইআটির কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন পশ্চিম অধিবাসীবৃন্দের পুজো সবসময়ই পরিচিত হয়েছে অভিনব থিমের জন্য। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। ২৩ তম বছরে পদার্পণ করা তাঁদের এবারের থিম ‘বিন্যাস’। অর্থাৎ, প্রকৃতি আর সভ্যতার মধ্যে এক নতুন ভারসাম্যের রূপরেখা।
প্রকৃতি থেকেই মানুষের জন্ম, প্রকৃতির হাত ধরেই সভ্যতার বিকাশ। সেই প্রকৃতিই আজ মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে অবহেলিত। মানুষের লোভ আর ভোগের ইচ্ছেতে প্রতিদিন ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে পরিবেশ। এই সহজ অথচ গভীর বার্তাই আসন্ন দুর্গাপুজোয় পৌঁছে দেবে প্রফুল্লকানন পশ্চিম অধিবাসীবৃন্দের পুজো। মানুষের স্বার্থে প্রকৃতি থেকে যা নেওয়া হচ্ছে, তা যেন শোষণ নয়, বরং ধার। সেই ধার চুকিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকারই এই থিমের মূল বার্তা।
শিল্পী কৃশাণু পালের তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে এই অনন্য মণ্ডপ। এখানে শুধু কারুকার্য নয়, প্রতিটি ইঞ্চি জুড়েই ফুটে উঠবে মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক। মণ্ডপে থাকবে এক জলের উৎস, যা জীবনধারার প্রতীক। উৎস যদি প্রকৃতি হয়, তবে আধার হয়ে উঠবে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার মাধ্যম, মানুষ। এই দুইয়ের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠে জীবন। মণ্ডপে থাকবে আরও নানা ক্ষণস্থায়ী উদ্ভাবন যা দর্শনার্থীদের ভাবাবে যে আমাদের জীবনযাত্রা কতটা প্রাকৃতিক ভারসাম্যের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি দর্শক এই মণ্ডপসজ্জা দেখে বুঝবেন প্রকৃতি আর সভ্যতার ভারসাম্য রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
উদ্যোক্তাদের আশা, এই থিম মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়বে এবং ঘরবন্দি বঙ্গবাসীও পুজোর দিনে মণ্ডপমুখী হবেন, শুধু মণ্ডপসজ্জার জন্য নয়, বরং বার্তা গ্রহণের জন্য যেটা প্রতিটি দর্শকের মনে গেঁথে যাবে। এভাবেই কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন পশ্চিম অধিবাসীবৃন্দের এবারের দুর্গাপুজো শুধু আনন্দের নয়, চিন্তাশীল এবং শিক্ষণীয়ও হয়ে উঠেছে।