অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: নাহয় উৎসবের মরশুম, নাহয় বছরভর নিয়মের নিগড় থেকে কিছুটা ছাড়া পাওয়ার সময়। তাই বলে দেবী দুর্গা গড়ে ওঠার আগেই তাঁকে নিয়ে টানাটানি! কুমোরপাড়ায় ইনফ্লুন্সারদের ‘দাপাদাপি’ এখন শিল্পীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব রুখতে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার থেকে শিলিগুড়ির কুমোরপাড়ায় চালু হয়েছে যা নিয়ম। এবার থেকে প্রতিমা নিয়ে শুট করতে ভ্লগারদের গুনতে হবে মোটা অঙ্কের ভাড়া।
মৃন্ময়ীর সঙ্গে সেজেগুজে ভিডিও তোলা, রিল বানানো কিংবা লাইভ করে ফলোয়ার্স বাড়ানো আজকালকার ট্রেন্ড। সেই কাজ করতে গিয়ে প্রতিমার যে ক্ষতি হয়, সেদিকে খেয়াল রাখেন না কেউ! কখনও প্রতিমার সদ্য তৈরি হাতের আঙুল ভেঙে যায়, কখনও নাকের সুচারু অংশ ভোঁতা হয়ে যায়। নিজের হাতে নির্মাণের এহেন পরিণতি স্বাভাবিকভাবে শিল্পীদের কাছে যন্ত্রণার হয়ে ওঠে। তাই নিজেদের সৃষ্টি রক্ষায় এবার তাঁরা নিজেরাই হস্তক্ষেপ করলেন। এবার থেকে শিলিগুড়ির কুমোরপাড়া গিয়ে প্রতিমার সঙ্গে ছবি, ভিডিও তুলতে গেলে ভাড়া দিতে হবে। ছবির জন্য ১০০ টাকা এবং ভিডিওর জন্য ৩০০ টাকা দিতে হবে। সময় বরাদ্দ ২০-৩০ মিনিট। একটাই আশা, গাঁটের কড়ি খসানোর ভয়ে যদি ভ্লগারদের অত্যাচার কমে।
শিল্পীদের বক্তব্য, দুর্গা প্রতিমা তৈরির জন্য তাঁরা বেশ মোটা অঙ্কের বরাত পান। সেই টাকার অধিকাংশ আগাম দেওয়া হয়। এরপর প্রতিমার কোনও অংশ নষ্ট হলে তা তৈরি করতে বাড়তি খরচ হয়। অথচ সেই টাকা ক্রেতার থেকে আলাদাভাবে দাবি করা যায় না। সেই ক্ষতি এড়াতে তাঁরা ভ্লগারদের উপর আর্থিক ‘বোঝা’ চাপিয়ে দিয়েছেন। আরেক শিল্পী বলছেন, “ভিডিও শুটিংয়ের কারণে তাঁদের নিজেদের কাজে ক্ষতি হয়, পরিবেশ নষ্ট হয়।” মঙ্গলবার থেকে ছবি এবং ভিডিওর জন্য টাকা নেওয়ায় সেই ‘উৎপাত’ কমবে বলে আশা তাঁর। হয়ত স্বস্তি পাবেন মা দুগ্গাও! তাঁকেও তো মণ্ডপের জন্য ‘রেডি’ হতে হবে!