চোখের জলে চিরবিদায় জুবিনকে, জনস্রোতে বিশ্ব রেকর্ড
বর্তমান | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গুয়াহাটি: সকাল থেকে আকাশের মুখভার। মঙ্গলবার গায়ক জুবিন গর্গের শেষকৃত্যে শামিল হাজার অনুরাগীর সঙ্গে যেন কাঁদল প্রকৃতিও। মঙ্গলবার সাতসকালে অর্জুন ভোগেশ্বর বড়ুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় জুবিনের শবদেহ। সেখানে দ্বিতীয়বার শিল্পীর ময়নাতদন্ত করা হয়। সেখান থেকে শববাহী শকট পৌঁছয় কামারকুচি এনসি গ্রামে। এই জায়গাই নির্ধারিত হয়েছিল শেষকৃত্যস্থল হিসেবে। সেখানে তখন জনসমুদ্র। এদিন মানুষের ভিড় ছাপিয়ে গিয়েছে রবিবার, সোমবারের ভিড়ের যাবতীয় রেকর্ডও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চতুর্থ জমায়েত হিসেবে এই জনস্রোত নাম লেখাল ‘লিমকা বুক অব রেকর্ড’-এ। ভিড় সামলাতে প্রায় পাঁচঘণ্টা বন্ধ ছিল গুয়াহাটির জাতীয় সড়ক। অসমের বিভিন্ন জায়গায় বড় স্ক্রিন লাগানো হয়েছিল। সেগুলির সামনেও জনতার ভিড় নেমেছিল।
এদিন একুশবার তোপধ্বনিতে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হল শিল্পীকে। অসমের ‘চোখের মণি’কে সকলে বিদায় জানালেন চোখের জলে। সকলের কণ্ঠে জুবিনের গান, ‘মায়াবিনি রাতির বুকুত’। দু’বছর আগে এমনই শেষইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন জুবিন! স্বামীকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুবিনপত্নী গরিমা। পান ভীষণ পছন্দ করতেন জুবিন। সে কারণে শেষযাত্রায় পানের ব্যবস্থা করেছিলেন গরিমা। ২০১৭ সালে নিজের জন্মদিনে একটি চন্দন গাছের চারা রোপণ করেছিলেন জুবিন। সেই গাছের কাঠ ঠাঁই পেয়েছে শিল্পীর অন্তিম শয্যায়। তাঁর মুখাগ্নি করেন ছোট বোন পামী বড়ঠাকুর। সঙ্গে ছিলেন জুবিনের সহযোগী অরুণ ও কবি-গীতিকার রাহুল গৌতম। দূরে দাঁড়িয়েছিলেন শিল্পীর বাবা মোহিণী মোহন বর্ধন বোরঠাকুর। এসেছিল জুবিনের চার পোষ্য সারমেয়। ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু সহ আরও অনেকে। শেষকৃত্যস্থলে জুবিনের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য ১০ বিঘা জমি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এছাড়াও শিল্পীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের যাবতীয় ব্যবস্থাও করবে অসম সরকার।