ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর; ঘড়ঘড় শব্দে সাটার উঠল। গতকাল কিছু নতুন বই এসেছে। ভিতরে ঢুকে দোকানের একদিকে রাখা সেই বইগুলি হাতে নিয়ে দেখছিলেন মালিক সানিয়াসনাইন চিলু। এরইমাঝে কবিতার একটা বইয়ের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন এক প্রৌঢ়। ধীরে ধীরে আরও কয়েকজন এলেন দোকানে। এদিন শ্রীনগরে লালচকে ফের নতুন-পুরনো বইয়ের সেই চেনা গন্ধ। কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর খুলে গেল কাশ্মীরের সবচেয়ে পুরনো বইয়ের দোকান ‘বেস্টসেলার’।
পাঁচ দশকের পুরনো ব্যবসায় সম্প্রতি কোপ বসায় ই-কমার্সের বাড়াবাড়ি। মুঠোফোনে মাত্র কয়েকবার আঙুল ছোঁয়ালেই কেল্লাফতে। কয়েক মিনিটের মধ্যে বই পছন্দ করে অনলাইনে অর্ডার। তাই খুব একটা দোকান মুখো হচ্ছেন না মানুষজন। তার উপর মোবাইল হাতে আসতেই বই পড়ার অভ্যাসও কমে গিয়েছে। একাধিক প্রতিবন্ধকতার জেরে কার্যত বাধ্য হয়েই এপ্রিল মাসে বন্ধ করে দেওয়া বইয়ের দোকান। কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী দোকানটি বন্ধ হওয়ার পর থেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন দেশের নানা প্রান্তের বইপ্রেমীরা। অবশেষে সাধারণের জন্য ফের খুলে গেল বেস্টসেলারের দরজা।
সানিয়াসনাইনের কথায়, ‘বন্ধ হওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই কাশ্মীর সহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে আমাদের কাছে অসংখ্য ইমেল, চিঠি ও ফোন আসতে শুরু করে। সবার একটাই দাবি - দ্রুত যেন দোকানটি খোলা হয়। পাঠকদের এই ভালোবাসা ও সমর্থনের জেরেই ফের খুলে গেল বেস্টসেলার।’ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও শামিল তারা। মালিকের কথায়, এবার সোশ্যাল মিডিয়াতেও বইয়ের প্রচার করা হবে। ১৯৮০ সালে সানাউল্লাহ চিলুর নেতৃত্বে পথ চলা শুরু। ২০১৭ সালে সানাউল্লাহর ছেলে সানিয়াসনাইন বেস্টসেলার বুকস্টোরের দায়িত্ব নেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে বইয়ের দোকানটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।