প্যাকেটজাত খাবার, জিএসটির সুরাহা কবে, ধন্দে কেন্দ্র
বর্তমান | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি: নুডলস হোক বা বিস্কুট, হজমোলা হোক বা টেট্রা প্যাকের পানীয়—কবে থেকে মিলবে নয়া জিএসটি হারের সুবিধা? কবে কমবে প্যাকেটজাত খাবারের দাম? স্পষ্ট করে বলতেই পারছে না মোদি সরকার। অথচ ঘটা করে জাতির উদ্দেশে ভাষণে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘সাশ্রয়ের উৎসব শুরু হচ্ছে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে।’ অর্থাৎ জিএসটির (পণ্য ও পরিষেবা কর) হার কমার ফলে নাগরিকদের পয়সা বাঁচবে। কিন্তু সেই ‘উৎসবে’র আমেজ কবে অনুভব করা যাবে, নিশ্চিত করতেই পারছে না কেন্দ্র। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ান এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘নতুন দাম নিয়ে পণ্য প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে আলোচনা করছি। পুরোনো মূল্যের উপর নতুন দামের স্টিকার লাগানো হবে, নাকি অন্য কিছু উপায় অবলম্বন করবে সংস্থাগুলি সেব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে। খুচরো ফেরত দেওয়ার সমস্যার সমাধান নিয়েও আলোচনা চলবে। তবে শীঘ্রই নতুন দামে প্যাকেটজাত খাবার মিলবে। যদিও কবে থেকে, তা বলা যাচ্ছে না।’ মন্ত্রী এও জানিয়েছেন, জিএসটির নতুন হার কার্যকর হওয়ায় যাতে সস্তায় প্যাকেটজাত খাদ্যবস্তু মেলে, তার জন্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বাজারে সমীক্ষা করা হবে। তাঁর সাফ কথা, প্রধানমন্ত্রী যখন জিএসটি কম করার বলেই দিয়েছেন, তখন হবেই।
যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এ সিদ্ধান্ত মোদি সরকারের নয়! এমনকী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীরও নয়! সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিএসটি কাউন্সিল। সেটি একটি সাংবিধানিক সংস্থা। প্রধানমন্ত্রী সেই সংস্থার কেউ নন। পদাধিকারবলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ওই কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন। সদস্য সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। তাঁরাই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিএসটির হার কমানো হবে। সরকার স্রেফ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার অথরিটি মাত্র। অথচ সাংবিধানিক সংস্থার কৃতিত্ব অস্বীকার করে, উৎসবের মরশুমে মানুষকে সাশ্রয়ের সুযোগ করে দিলাম বলে ‘নেপোয় দই মারা’র চেষ্টা করছেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু বাস্তবে কবে মিলবে সুরাহা? স্পষ্ট বলতেই পারছে না কেন্দ্র। সিংহভাগ দোকানদারই পুরোনো ‘এমআরপি’তেই সামগ্রী বিক্রি করছেন। তাঁদের বক্তব্য, স্টক পুরোনো, যা আগের হারে জিএসটি দিয়েই কেনা। তাহলে আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করে কীভাবে বিক্রি করব? তার উপর খুচরোর সমস্যা। পাঁচ টাকার বিস্কুটের প্যাকেট সস্তা হয়ে যদি সাড়ে চার টাকা হয়, ৫০ পয়সা ফেরত দেওয়া মহা ঝামেলার বিষয়। তাই কেন্দ্রও পড়েছে ফাঁপরে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের সঙ্গে চলছে প্রস্তুতকারকদের বৈঠক। সূত্রে খবর, পাঁচ, দশ, পনেরো কিংবা কুড়ি টাকা দামের প্যাকেটজাত খাবারের দাম না কমিয়ে সামান্য ওজন বাড়ানো হতে পারে। তাহলেই খুচরো সমস্যার সমাধান হবে।
আগামী কাল নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপমে শুরু হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তারই প্রচারে চিরাগ পাসোয়ান বলেছেন, ‘একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই। প্যাকেটজাত খাবার মানেই তার খাদ্যগুণ কমে গেল, এই ধারণা ভ্রান্ত। তাই খাদ্যের উপাদান, খাদ্যগুণের বিশদ উল্লেখ প্রতিটি প্যাকেটজাত খাবারে স্পষ্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’