নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বাংলা ভাষায় কথা বলতে শুনে ফের জুটল বাংলাদেশি তকমা। বাংলার ফেরিওয়ালাদের আটক করে ওড়িশায় চলল নির্যাতন। অতিরিক্ত রোজগারের আশায় মুর্শিদাবাদের নওদা থেকে চারজন শ্রমিক ওড়িশায় পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা বিপদে পড়েছেন। জানা গিয়েছে, নওদা থানার গঙ্গাধারী এলাকার চার শ্রমিক ওড়িশায় যান। তাঁরা সেখানে ফেরিওয়ালার কাজ করতেন। গত রবিবার সেখানকার পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের আটক করে নির্যাতন করে। সেখানকার অন্যান্য বাঙালি শ্রমিকরা তড়িঘড়ি ওই ফেরিওয়ালাদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। তাঁরা স্থানীয় থানা এবং সাংসদ আবু তাহের খানের দ্বারস্থ হন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ উদ্যোগ নিয়ে ওই চার ফেরিওয়ালাকে মুর্শিদাবাদে ফিরিয়ে আনছেন।
আটক হয়ে থাকা ফেরিওয়ালা তাইমুল শেখ বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফেরি করতাম। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ আমাদের তুলে নিয়ে যায়। আমরা বাংলায় কথা বলছিলাম বলে ওরা সকলেই ভেবেছিল, আমরা বাংলাদেশি। ডকুমেন্টস দেখালেও ওরা বিশ্বাস করেনি। পুলিশের অত্যাচারে আমরা রীতিমতো আতঙ্কিত। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ নিয়ে আমাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন।
তাইমুলের দাদা তাইদুল শেখ বলেন, আমার ভাই এবং জামাইবাবু ওড়িশায় গিয়ে আটক হয়ে পড়ে। অন্যান্য শ্রমিকদের মাধ্যমে আমরা খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশের দ্বারস্থ হই। স্থানীয় থানা এবং আমাদের সাংসদের উদ্যোগে ওড়িশায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওদের ছাড়ানো হয়েছে। ওরা বাড়ি ফিরে আসছে, এটাই স্বস্তির খবর।
নওদা থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, আমরা খবর পেয়েই জেলা পুলিশ আধিকারিকদের জানাই। ওড়িশা থেকে ওই আটক ফেরিওয়ালাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নওদার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখ বলেন, মাতৃভাষায় কথা বলায় আমাদের দেশেরই অন্য রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের মার খেতে হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়। মুর্শিদাবাদ জেলার শ্রমিকরা তাঁদের কর্মনৈপুণ্যের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছেন। তারা নিজেদের জায়গায় অনবদ্য কাজ করেন। অথচ শুধুমাত্র বাংলা বলতে দেখে তাঁদের উপরে অকথ্য নির্যাতন করা হচ্ছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই অত্যাচারের প্রবণতা সবথেকে বেশি। আমাদের এলাকার যে ফেরিওয়ালারা আটক হয়েছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা সকলেই ওঁদের পরিবারের পাশে আছি।