নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কার্যত অন্ধকারে ডুবেছে পার্ক সার্কাস, মিন্টো পার্ক, এ জে সি বোস রোড, শরৎ বোস রোড, এক্সাইড, রবীন্দ্রসদন, পার্ক স্ট্রিট সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল! কোথাও কোমর জল, কোথাও আবার হাঁটু জল পরিস্থিতি। জলের মধ্যেই যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাস, কোথাও পড়ে রয়েছে বাইক, প্রায় জনমানবশূন্য রাস্তা-যেন বিপর্যয় নেমে এসেছে। নিমেষে গায়েব হয়ে গিয়েছে স্বাভাবিক ছবি। হলিউডি সিনেমা ‘দ্য ডে আফটার টুমোরো’ কিংবা ‘২০১২’-তে যেভাবে গোটা শহর জলের তলায় ডুবেছিল, অন্ধকারে আচ্ছন্ন মঙ্গলবার রাতের কলকাতা দেখে সেই সিনেমার কথা আপনার মাথায় আসতেই পারে। যেন ধ্বংসলীলা চলেছে শহরে।
সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকারে ডুবে যায় শহর! বলা ভালো, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে কোথাও বিস্তীর্ণভাবে কোথাও আবার বিক্ষিপ্তভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। ভারী বৃষ্টির জেরে এদিন রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন অংশ জলমগ্ন ছিল। তড়িদাহত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এড়াতে সিইএসসির তরফে শহরের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে জল জমেছিল, সেই সমস্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। যার জেরে শহরের বড় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি অন্ধকারে ডুবে যায়। যাদবপুর থেকে সন্তোষপুর, নয়াবাদ, মুকুন্দপুর, লেক গার্ডেন্স, নিউ আলিপুর—সর্বত্রই ছবিটা এক। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকাল থেকে যে জলমগ্ন পরিস্থিতি ছিল, রাতেও তার কোনও বদল ঘটেনি। জল একটুও নামেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শহরের বড় অংশে এদিন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় বেসরকারি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
অন্যদিকে, এদিন রাতে উল্টোডাঙা, হাডকো এলাকায় জমা জল না থাকলেও সেখানে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উল্টোডাঙা সাবওয়ের একাংশে জল জমে থাকায় খান্নাগামী সাবওয়ে দিয়ে দু’দিকের গাড়ি যাতায়াত করছিল। কিন্তু, কোনও ট্রাফিক পুলিস না থাকায় রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। হাইট বারে আটকে যায় গাড়ি।
এদিন রাতেও চালু ছিল কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুম। কর্মীরা অনবরত শহরের খবর রেখেছেন। যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া যায়নি। কারণ, প্রবল বৃষ্টির জেরে রস্তায় লাগানো বহু সিসি ক্যামেরা করেনি।