• ঋণে ডুবেছে ক্রেতা, ফাঁকা পুজোর বাজার
    এই সময় | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সঞ্জয় দে, দুর্গাপুর

    পুজোর বাকি মাত্র চার দিন। কিন্তু এখনও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে স্থানীয় বাজারগুলিতে পুজোর বাজার সে ভাবে জমে ওঠেনি। হাতে গোনা কয়েকটি নামী দোকান ছাড়া বাকি দোকানগুলিতে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। ব্যবসায়ীদের কথায়, এখন অধিকাংশ ক্রেতার পছন্দ অনলাইনে কেনাকাটা। কেউ কেউ শপিং মলেও যাচ্ছেন।

    কেনাকাটা আগের মতো না–হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে আরও একটি কারণ। স্থানীয় বাজারের সিংহভাগ ক্রেতাই নিম্ন আয়ের লোকজন। আর তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন মাইক্রোফিনান্স সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে বসে আছেন। প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি দিতে নাভিশ্বাস উঠছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বাজারমুখো হচ্ছেন না। হাতে টাকা এলে কিস্তি দেওয়ার জন্য রেখে দিচ্ছেন।

    দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের চণ্ডীদাস বাজারে প্রায় ৪০ বছর ধরে রেডিমেড পোশাকের ব্যবসা করছেন রতন দেবনাথ। হতাশার সুরে বললেন, ‘স্টকে কয়েক লাখ টাকার জামাকাপড় রয়েছে। কিন্তু কাস্টমার নেই। যাঁরা আসতেন তাঁদের অনেকেই এখন শপিং মলে যান বা অ্যাপে কেনাকাটা করেন।’

    রতনের বক্তব্যেই উঠে এল ঋণ মেটাতে গিয়ে সংসারে টানাটানির কথা। তাঁর কথায়, ‘নিম্ন আয়ের লোকজনদের একটা বড় অংশ নিয়মিত একাধিক স্মল সেভিংস সংস্থা থেকে ঋণ নেন। প্রতি সপ্তাহে কিস্তির টাকা জোগাড় করতে গিয়ে ফের চড়া সুদে ধার করেন টাকা। এই অবস্থায় পুজোর বাজার করবে কী ভাবে?’ তিনি জানালেন, সোমবার রাত থেকে ডিএসপি ও এএসপি কর্মীদের বোনাস দেওয়া হচ্ছে। এখন সেটাই ভরসা ব্যবসায়ীদের।

    দুর্গাপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলার পল্লবরঞ্জন নাগ বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডে বহু মহিলা ঋণ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। পরিস্থিতি এমনই যে পুজোর বাজার করতে হলে ওঁদের ফের ঋণ নিতে হবে।’

    এক সময়ে সস্তায় ভালো পোশাক কিনতে মামরা বাজারে ভিড় জমত ক্রেতাদের। সেখানেও এ বার ভিড় নেই। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগামী তিন দিনে হয়তো কিছু বিক্রি হবে।

  • Link to this news (এই সময়)