• শিক্ষা অধিকারীর দপ্তরে চরম কাণ্ড, প্রধান শিক্ষক খোদ বেল্ট হাতে চড়াও! সিসিটিভি ফুটেজ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে...
    আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে প্রাথমিক শিক্ষা আধিকারিকের দপ্তরে নজিরবিহীন ঘটনা। কর্মীদের সামনেই এক প্রধান শিক্ষক চড়াও হলেন আধিকারিকের উপর। বেল্ট দিয়ে একের পর এক আঘাত। পুরো ঘটনা ধরা পড়েছে দপ্তরের সিসিটিভি ক্যামেরায়।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক ব্রিজেন্দ্র কুমার বর্মা মহম্মদাবাদের নাদওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল শিক্ষা আধিকারিক দপ্তরে। সেই সূত্রেই সোমবার তাঁকে ডেকে পাঠান আধিকারিক অখিলেশ প্রতাপ সিংহ। কথা বলতে বলতে কীভাবে তা হঠাৎই এমন হিংস্র মোড় নেয়, সেটাই এখন প্রশ্ন।

    সূত্রের খবর, বৈঠক চলাকালীন আচমকা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বর্মা। প্রথমে একটি ফাইল আছড়ে ফেলেন আধিকারিকের টেবিলে। তার পর তিনি কোমর থেকে বেল্ট খুলে একের পর এক আঘাত করেন আধিকারিকের গায়ে। মাত্র পাঁচ সেকেন্ডে চার বার আঘাত। ভিডিওতে এমনই দৃশ্য ধরা পড়েছে। একজন কর্মী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও, বর্মা থামেননি। শেষে একাধিক কর্মী মিলে তাঁকে আটকান।

    এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, আধিকারিক সিংহ যখন পুলিশকে খবর দেওয়ার জন্য ফোন করতে যান, তখন তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে দেন বর্মা। এমনকী যে ক্লার্ক (প্রেম শঙ্কর মৌর্য) ঘটনাটি থামাতে ঘটনাস্থলে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁকেও আঘাত করা হয়।

    এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে আরও এক জটিলতা। জানা গিয়েছে, বর্মা তাঁর স্কুলের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে গাফিলতার অভিযোগে নোটিশ দিয়েছিলেন। সেই নোটিশ কোনওভাবে রাজনৈতিক মহলে পৌঁছে যায়, এবং উলটে বর্মার বিরুদ্ধেই অভিযোগ আসে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁকে তলব করেন সিংহ। বৈঠকে ভবিষ্যতে এমন পদক্ষেপ না করার জন্য হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেই সতর্কবার্তাই যেন আগুনে ঘি ঢালে।

    ঘটনার পরে অখিলেশ প্রতাপ সিংহ কোতোয়ালি নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বর্মাকে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারা অনুযায়ী এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকলেও এর তদন্ত জারি রয়েছে।

    সীতাপুর পুলিশের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানো হয়েছে, "কোতোয়ালি নগর থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ধারায় এফআইআর করা হয়েছে। অভিযুক্ত বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে। পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করা হবে।"

    অন্যদিকে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছে শিক্ষা দপ্তরও। বর্মাকে তাৎক্ষণিকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আধিকারিক প্রতাপ কুমার সিংহ ইতিমধ্যে উচ্চ আধিকারিকদের কাছে তাঁর চাকরি খারিজের সুপারিশ পাঠিয়েছেন, কারণ তিনি "শৃঙ্খলাভঙ্গের চরম নিদর্শন" স্থাপন করেছেন বলে দাবি।

    সারা রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে এই ঘটনা। প্রশাসনিক মহলে প্রশ্ন উঠছে- একজন শিক্ষক যদি শিক্ষা আধিকারিকের দপ্তরেই আইন হাতে তুলে নেন, তবে শিক্ষার্থীদের সামনে তিনি আদর্শ তৈরি করবেন কীভাবে?
  • Link to this news (আজকাল)