এক দিকে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মেঘ ভাঙা বৃষ্টির মতো প্রবল বর্ষণ। তার সঙ্গে গঙ্গায় ভরা কটালের বান। এই দুইয়ের মিলিত প্রভাবে মঙ্গলবার কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল হাওড়ার জনজীবন। বিকেলে সামান্য রোদ দেখা গেলেও রাত পর্যন্ত বহু জায়গা থেকে জল নামেনি। পুরসভা জানিয়েছে, গঙ্গায় কটালের বান থাকায় জলস্তর নামছে না। ফলে, পাম্প করে জমে থাকা জল নদীতে ফেললেও তা আবার এলাকায় ঢুকে আসছে।
পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত আছে। ত্রিফলা আলোগুলির ফিডার বক্স কোথাও খোলা আছে কিনা দেখতে পুরসভার বিদ্যুৎ দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপজ্জনক বাড়িগুলির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।’’
সোমবার রাত থেকে টানা ঘণ্টা পাঁচেকের বৃষ্টিতে হাওড়া শহরের ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্লাবিত হয়ে যায় ২৮টি ওয়ার্ড। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা হয় উত্তর হাওড়ার ৭, ১০ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফকির বাগান লেন, কামিনী স্কুল লেন, সীতারাম বসু লেন, বেলগাছিয়া, ইছাপুরের কাছে শৈলেন মান্না সরণির। কোমর সমান জল জমে ডুমুরজলায় এইচআইটি আবাসনে। জলে ডুবে যায় সত্যবালা হাসপাতাল-সহ জিটি রোড এবং টি এল জায়সওয়াল হাসপাতাল।
পুজোর ঠিক মুখে এমন জল-যন্ত্রণার জেরে প্রবল উদ্বেগে বিভিন্ন পুজো কমিটি। পঞ্চাননতলা রোড দু’ফুট উঁচু করে দেওয়ায় সেখানকার একাধিক মণ্ডপে জল ঢুকেছে। সাজসজ্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু মণ্ডপের।
অন্য দিকে, কলকাতার হেস্টিংসে জমা জলের জেরে যানজটে এ দিন পুরোপুরি থমকে যায় বিদ্যাসাগর সেতু ও কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। কলকাতা পুলিশ কোনও গাড়ি বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে আসতে না দেওয়ায় যানজট ছড়িয়ে যায় কোনা এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে নিবড়া মোড়ে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা জানান, আন্দুল রোড ও কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসা কিছু ছোট গাড়িকে হাওড়া সেতুর দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বড় গাড়িগুলিকে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজ়া থেকে ঘুরিয়ে জাতীয় সড়কে পাঠিয়ে দেওয়া হয় নিবেদিতা সেতু ধরার জন্য।