নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১-এ ২০০৫ সাল থেকে রয়েছি। কিন্তু আবাসনের ভিতরে জল জমতে কখনও দেখিনি। আমাদের আবাসনের আশপাশের বড় নর্দমা দিয়ে জল নেমে যায়। কিন্তু সোমবার রাতভর বৃষ্টির পরে এ বার আর জল নামেনি। উল্টে জল ব্যাক-ফ্লো করে আবাসনে ঢুকেছে। তার জেরে আবাসন তল্লাট ডুবে ছিল দুপুর পর্যন্ত। পরে পরিস্থিতি খানিক বদলায়। আবাসনের মাঝের অংশের জল নেমে যায়। তবে আশপাশে জল জমে ছিল অনেক ক্ষণ।
নিউ টাউনে আমাদের আবাসনটি প্রিমিয়াম গ্রুপের আওতায় পড়ে। এখানে ফ্ল্যাটের দামও বেশি, করও চড়া। তাই সেই আবাসনের এমন দুরবস্থা দেখে সকলেই খুব হতাশ। কেন একটি পরিকল্পিত শহরে এমন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হবে, তা নিয়ে আবাসনের বাসিন্দারা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।
আমাদের আবাসনে চারটি টাওয়ার, প্রতিটিতে ১৩টি তলা রয়েছে। বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ প্রবীণ নাগরিক। আবাসনের একতলায় জল ঢুকে দু’টি টাওয়ারের লিফ্ট এ দিন খারাপ হয়ে যায়। ফলে চরম বিপাকে পড়েন বাসিন্দারা। জরুরি কাজে নীচে নেমে হেঁটে ১৩তলায় উঠতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে অনেককেই। আমার এক বন্ধুর সদ্য বাইপাস অস্ত্রোপচার হয়েছে। জরুরি কাজে তাঁর বেরোনোর কথা ছিল। কিন্তু লিফ্ট বন্ধ থাকায় হেঁটে উঠতে হবে বলে তিনি আর ফ্ল্যাট থেকে নামেননি। দু’-এক জন প্রবীণ বাসিন্দাকে দেখলাম, লিফ্ট খারাপ থাকায় হাঁফাতে হাঁফাতে সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠছেন। আমাদের ভাগ্য ভাল যে, আমাদের টাওয়ারে লিফ্টটা ঠিকঠাক চলছিল।
‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র একটি বাজারে এক দোকানদারকে ফোন করেছিলাম জিনিস পৌঁছে দিতে। তিনি জানালেন, বিভিন্ন দোকানে জল ঢুকে জিনিস নষ্ট হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এত ঝড়ঝঞ্ঝা সত্ত্বেও শহরের এমন বেহাল অবস্থা আগে দেখিনি। শুনলাম, নিউ টাউনের জল নামে যে বাগজোলা খাল দিয়ে, সেটিও ভরে গিয়েছে। তাই নিউ টাউনের অনেক জায়গার মতো আমাদের আবাসনের জলও সহজে নামেনি। আশা করব, প্রশাসন এ নিয়ে ভাববে, সচেতন হবে। পরিকল্পিত শহরে এমন জলবন্দি দশা মানতে পারছি না।