• প্রায় অমিল গণপরিবহণ, দ্বিগুণ ভাড়া, পথে নেমে নাকাল শহরবাসী
    আনন্দবাজার | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সকালের ব্যস্ত সময়ে মঙ্গলবার দক্ষিণ শহরতলির শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন থেকে ময়দান পর্যন্ত অংশে মেট্রো পরিষেবা তখন বন্ধ। রাস্তায় জমা জলের কারণে বন্ধ সরকারি, বেসরকারি বাস। দ্বিগুণ ভাড়াতেও দেখা নেই অ্যাপ-ক্যাবের। হাতে গোনা অটো রাস্তায় নামলেও তার ভাড়া আকাশছোঁয়া। গড়িয়া থেকে গড়িয়াহাট যেতে ২০ টাকা ভাড়া এ দিন ১০০ টাকা পর্যন্তও পৌঁছে যায়। গড়িয়া থেকে টালিগঞ্জ যাওয়ার জন্য দিতে হয়েছে ২২ টাকার বদলে ৫০ টাকা। হাওড়া স্টেশন পৌঁছনোর বাস অথবা মেট্রো ধরতে হাঁটুজল ঠেলে বিকেলেও হাঁটছেন অসংখ্য যাত্রী। নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাব না পেয়ে উড়ান ধরতে পারলেন না অনেকে।

    মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো অতিবৃষ্টির দিনে শহর সাক্ষী থাকল এমনই নানা ভোগান্তির ছবির।

    রাতভর বৃষ্টিতে এ দিন টালিগঞ্জ এবং রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশনের মাঝে সুড়ঙ্গে জল জমে যায়। পরে কালীঘাট এবং যতীন দাস পার্ক স্টেশন এলাকাতেও জল ছড়িয়ে পড়ে বলে সূত্রের খবর। বৃষ্টি-বিভ্রাটে এ দিন সকাল থেকে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত টালিগঞ্জ থেকে ময়দানের মধ্যে কোনও মেট্রো চলেনি। সকালে দীর্ঘক্ষণ শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন থেকে ময়দান স্টেশনের মধ্যে মেট্রো বন্ধ থাকায় দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

    ভবানীপুর, পার্ক সার্কাস, এ জে সি বসু রোড, শরৎ বসু রোড, এক্সাইড মোড়-সহ নানা জায়গায় হাঁটু থেকে কোমরজল জমে যাওয়ায় চলেনি বাসও। একই ভাবে উল্টোডাঙা, সেক্টর ফাইভ, করুণাময়ী, উইপ্রো মোড়, নিউ টাউন, শাপুরজি মোড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল থাকায় বিকল হওয়ার আশঙ্কায় প্রায় কোথাও বাস নামেনি। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় যাত্রীদের। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘আধুনিক জ্বালানি সাশ্রয়কারী বাস জমা জলে বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পথে নামতে পারেনি। রাস্তায় যাত্রী থাকলেও পরিষেবা দেওয়া যায়নি।’’ আজ, বুধবারও সকালের দিকে বাসের পরিষেবা স্বাভাবিক থাকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

    বৃষ্টিতে কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা ব্যাহত হয়। যান চলাচল বিপর্যস্ত থাকায় বহু বিমানের কর্মী ও চালকেরা সময় মতো পৌঁছতে পারেননি। সকাল থেকে ৪০টির বেশি উড়ান ছাড়তে বিলম্ব হয়। বেলার দিকে বহু যাত্রী টিকিট বাতিল করায় সংস্থাগুলিও উড়ান বাতিল করে দেয়। বাতিল উড়ানের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০টি। যাত্রীদের অনেকেও সময় মতো পৌঁছতে পারেননি। সোমবার রাত ৩টে নাগাদ প্রবল বৃষ্টির কারণে পুণে থেকে আসা একটি বিমানকে ভুবনেশ্বরে পাঠাতে হয়। একাধিক বিমান সংস্থা নির্দেশিকা খতিয়ে দেখে বাড়ি থেকে বেরোনো বা আগেভাগেই বেরোনোর পরামর্শ দেয় যাত্রীদের। তবে, বিমানবন্দরের রানওয়েতে এ দিন জল জমেনি। এপ্রন এলাকায় কিছুটা জল জমলেও পরে তা বার করে দেওয়া হয়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)