• রেলকর্মীদের জন্য ‘উৎসব বোনাস’, কবে ঘোষণা করা হবে জেনে নিন এখনই
    আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:  উৎসবের সিজন ঘনিয়ে আসছে। ঠিক এই সময়ে দেশের লক্ষ লক্ষ রেলকর্মীর জন্য সুখবর। কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা রেলকর্মীদের জন্য প্রোডাক্টিভিটি-লিঙ্কড বোনাস ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করতে চলেছে। এই বোনাস দেওয়া হবে মূলত অরাজস্ব বা নন-গেজেটেড কর্মীদের, যাঁরা দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন নেটওয়ার্কের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখছেন।

    ২০২৪ সালে প্রায় ১১ লক্ষ রেলকর্মী এই বোনাসের টাকা পেয়েছিলেন। এর ফলে কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও মনোবল যেমন বেড়েছিল, তেমনি সারা দেশে উৎসবের মরসুমে ভোক্তা ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সরকার মনে করছে, এবছরও একই ধরনের প্রভাব পড়বে। অর্থাৎ, শুধু কর্মীদের পরিবারের আনন্দই নয়, সমগ্র বাজার অর্থনীতির চাকা আরও গতি পাবে এই ঘোষণার ফলে।

    এই অনুমোদনের সময়টিও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সম্প্রতি সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও গৃহস্থালী সামগ্রীর ওপর জিএসটি কমিয়েছে। এর ফলে ক্রেতাদের কেনাকাটার ইচ্ছা কিছুটা বাড়ছে। এখন যদি রেলকর্মীদের হাতে বাড়তি বোনাস আসে, তবে টেকসই দ্রব্য, ইলেকট্রনিকস, পোশাক থেকে শুরু করে উৎসবের অপরিহার্য সামগ্রী—সব ক্ষেত্রেই ভোগব্যয় বাড়তে পারে।

    ভারতের রেলকর্মীরা মূলত শহর ও শহরতলির বিশাল ভোক্তা গোষ্ঠী। তাঁদের হাতে অতিরিক্ত ক্রয়ক্ষমতা এলে স্থানীয় বাজার থেকে বড় খুচরো চেইন—সবাই লাভবান হবে। বিশেষ করে দীপাবলির আগে অতিরিক্ত অর্থ হাতে আসা মানেই খুচরো বাজারে ব্যাপক সাড়া।

    অর্থনীতিবিদদের মতে, উৎসবকে কেন্দ্র করে দেওয়া এমন আর্থিক উপহার বহুগুণে প্রভাব ফেলে অর্থনীতিতে। কারণ একদিকে কর্মীদের পরিবারে সরাসরি খরচের সুযোগ তৈরি হয়, অন্যদিকে খুচরো বাজারে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়, যা উৎপাদন, পরিবহন ও পরিষেবা খাতে একাধিক তরঙ্গ তৈরি করে।

    এবছর মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। একইসঙ্গে সরকারও বিভিন্ন নীতি পদক্ষেপের মাধ্যমে ভোক্তা ব্যয় বাড়াতে উৎসাহ দিচ্ছে। ফলে রেলকর্মীদের হাতে এই বাড়তি নগদ বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে চাহিদার ধারা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

    নীতিনির্ধারকরা বর্তমানে ভোক্তা প্রবণতাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। একদিকে যেমন রাজকোষের শৃঙ্খলা বজায় রাখা প্রয়োজন, অন্যদিকে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করাও জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে রেলকর্মীদের উৎসব বোনাস শুধুমাত্র সামাজিক কল্যাণমূলক পদক্ষেপ নয়, বরং অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার একটি কার্যকরী কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

    যদি আসন্ন মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদন পায়, তবে তা হবে লক্ষ লক্ষ রেলকর্মী পরিবারের জন্য দীপাবলির আগে বড় উপহার। একইসঙ্গে এটি দেশের ভোক্তা অর্থনীতির গল্পে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কর্মীদের হাসিমুখ যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি বাজারে চাহিদা বাড়িয়ে সামগ্রিক অর্থনীতিকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে এই উৎসব বোনাস।
  • Link to this news (আজকাল)