আজকাল ওয়েবডেস্ক: “প্রাণ যাক, তবু রিল ডিলিট নয়!” -এই মন্ত্রে যেন সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছল উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকিতে। এক যুবতী নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও আপলোড করতেই বেঁধে গেল তুলকালাম কাণ্ড। মুহূর্তে ভাইরাল হয় তা। কোতওয়ালি থানার সামনে একটি রিল ভিডিও শ্যুট করেন তিনি। ভিডিওর পেছনে একটি জনপ্রিয় ভোজপুরি গান বাজতে শোনা যায়। কিন্তু এটি ভাইরাল হতেই বিপাকে পড়েন যুবতী। পরে ভিডিওটি মুছে ফেলতে বলেন পুলিশ। কিন্তু রুহি স্পষ্ট জনান, কিছুতেই তিনি ডিলিট করবেন না। এরপরই শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে রুহির উত্তপ্ত বাদানুবাদ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনার সূত্রপাত রুহির একটি রিল ভিডিও দিয়ে। সেখানে তাঁকে ধীরে ধীরে হাঁটতে দেখা যায়, পেছনে কোতওয়ালি থানা, আর ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে একটি জনপ্রিয় ভোজপুরি গান। ভিডিওটি নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায়। এমনকী মিলিয়ন ভিউ ছুঁয়ে ফেলে। বিষয়টি চোখ এড়ায়নি পুলিশেরও।
রিলটি সরিয়ে ফেলবার নির্দেশ নিয়ে রুহির বাড়িতে হাজির হন এক সাব-ইন্সপেক্টর ও এক মহিলা কনস্টেবল। কিন্তু রুহি সাফ জানিয়ে দেন, তিনি কোনওমতেই ভিডিও সরাবেন না। বলেন, “এত ভাইরাল হয়ে গিয়েছে, এখন মুছতে পারব না।” বাড়ির ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁর এই উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার সাক্ষী থাকেন বহু স্থানীয় মানুষ। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সেই দৃশ্যেরও ভিডিও করেন।
ভিডিওতে শোনা যায়, দৃঢ় কণ্ঠে রুহি বলছেন, “আমি মরে গেলেও এই ভিডিও সরাব না, আমি আবারও বলছি এটা করবনা আমি।” পাশে এক শিশুকণ্ঠের প্রতিধ্বনি- “আমরা এটি সরাব না।”
এহেন উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রুহি বলেন, “আমি আত্মহত্যা করব আপনারা যদি জোর করেন। আমার নাম রুহি। আমি একজন মেয়ে৷ আমি সবকিছু করতে পারি।” ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে পুলিশের উদ্দেশে এই ঘোষণা, আর নিচে কৌতূহলী জনতার ভিড়।
একজন পথচারী মোবাইলে গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করতে গেলে রুহি আপত্তি তোলেন, তখন পুলিশ তাঁকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। পরবর্তীতে রুহি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করে জানান, “আমি জানতামনা আমি যেখানে ভিডিওটি করেছি তা কোতওয়ালি থানার সামনে। এর জন্য যে পুলিশ এত চাপ দিতে পারে, তা'ও আমি ভাবিনি।” অর্থাৎ, থানার সামনে ভিডিও করলে এমন কাণ্ড ঘটবে, সে বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণাই ছিল না।
তাঁর দাবি, কেউ জোর করে ভিডিও ডিলিট করাতে চাইলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন। শেষ পর্যন্ত, পুলিশ কিছু না করেই ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যায়। ভিডিও যেমন ছিল, তেমনই থেকে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অন্যদিকে রুহি নিজের রিল-দৃঢ়তায় রীতিমতো নতুন ‘ইনফ্লুয়েন্সার আইকন’ হয়ে ওঠেন নেটিজেনদের একাংশের চোখে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ‘ভিউ’ এখন সম্মানের প্রশ্ন। আর এই সম্মান রক্ষায় রুহির এহেন অবস্থান নেটদুনিয়ায় সৃষ্টি করেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।