'আমার শেষ শো', আগেই বলেছিলেন অভিনেতা, অভিনয়ের মাঝে মঞ্চে ঠাস করে পরেই মৃত্যু 'দশরথ'-এর ...
আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রতিবছরের মতো রামলীলার জমজমাট শো। অগণিত দর্শকের ভিড়। ভরা মঞ্চে সহ অভিনেতাদের মাঝেই বসে ছিলেন 'রাজা দশরথ'। সংলাপ বলতে বলতে আচমকাই ঢলে পড়লেন সহ অভিনেতার কাঁধের উপর। মুহূর্তের মধ্যেই সব শেষ। অভিনয় চলাকালীন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মঞ্চেই মৃত্যু হল তাঁর।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচল প্রদেশের চাম্বায়। ৭০ বছর বয়সি অভিনেতার নাম, অমরেশ মহাজন। রামলীলায় তিনি রাজা দশরথের ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন। অভিনয় চলাকালীন আচমকা মঞ্চে লুটিয়ে পড়েন। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের জেরে মঞ্চেই সহ-অভিনেতাদের মাঝে মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ বছর ধরে একটানা তিনি রামলীলায় অভিনয় করছেন। বেশিরভাগ সময়েই 'রাজা দশরথ'-এর ভূমিকায় দেখা গেছে তাঁকে। কখনও কখনও রাবণের ভূমিকাতেও দর্শকদের নজর কাড়েন। বয়স ৭০ হলেও, নিয়মিত নাটকের মহড়ায় যেতেন। এদিনের অনুষ্ঠানের আগে দলের কর্মীদের জানিয়েছিলেন, এটিই তাঁর শেষ শো। এরপর অভিনয় জীবন থেকে অবসর নেবেন। বয়সের কারণেই বিশ্রাম নেবেন তিনি।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মঞ্চে তখন রামলীলার সকল অভিনেতারা। সামনেই বসে অগণিত দর্শক। টানটান উত্তেজনা সকলের মধ্যে। 'রাজা দশরথ' বসে আছেন সিংহাসনে। সকলে মাঝে তখন তিনি সংলাপ বলছিলেন। সংলাপ বলতে বলতেই সহ অভিনেতার কাঁধের উপর পড়ে যান অমরেশ। প্রথমে তাঁর সহ অভিনেতা টের পাননি কেন এমনটা ঘটল। কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারেন অমরেশের সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।
তড়িঘড়ি করে দলের কর্মীদের ডেকে পাঠানো হয়। মঞ্চে পর্দা টেনেই অমরেশকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শ্রী রামলীলা ক্লাব, চাম্বার সভাপতি স্বপন মহাজন জানিয়েছেন , অমরেশকে দ্রুত পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু সরকারি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে চিকিৎসকরা জানান, তিনি আর বেঁচে নেই। মঞ্চেই অভিনয় চলাকালীন তিনি পড়ে যান। তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন। দলের সকলেই শোকে ভেঙে পড়েছেন।
ঠিক এক বছর আগে, দিল্লির শাহদারার রামলীলা রামের চরিত্রে অভিনয় করার সময় সুশীল কৌশিক নামের এক অভিনেতা একইভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনিও সংলাপ বলার সময় বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এবং মঞ্চ থেকে নেমেই পড়ে যান। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে উত্তরপ্রদেশের বুদাউনে আরও এক মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল এক তরুণীর। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল দিক্ষা নামের তরুণীর। রবিবার সন্ধ্যায় ছিল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে হলুদ রঙের শাড়ি পরে সেজেছিলেন তিনি। সকলের সঙ্গে নাচ করছিলেন। আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন দিক্ষা। নাচ থামিয়ে বাথরুমে যান। সেই সময় তাঁর বুকে ব্যথা হচ্ছিল। বাথরুমে যাওয়ার পর কয়েক ঘণ্টায় আর তাঁর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকরা দিক্ষাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এও জানান, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় দেহ ময়নাতদন্তের অনুমতি দেয়নি পরিবার। পরিবারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, সোমবার বিয়ে উপলক্ষে রবিবারেই মোরাবাদ থেকে পাত্রপক্ষ রওনা দিয়েছিল। মাঝপথেই বরযাত্রীরা দিক্ষার মৃত্যুর খবর পান।