ডলারের তুলনায় ভারতীয় টাকার রেকর্ড পতন, শেয়ার সূচকেও ধস
আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডলারের বিপরীতে ভারতীয় টাকা মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এল। মার্কিন প্রশাসনের এইচ-১বি ভিসা ফি হঠাৎ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এবং শুল্ক আরোপের আশঙ্কা ঘিরে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়তেই রুপির দর নেমে গিয়ে দাঁড়াল ৮৮.৭ টাকায়।
একই সঙ্গে ভারতীয় শেয়ারবাজারেও দেখা গেল ধসের সুর। মঙ্গলবার সেনসেক্স সামান্য হলেও পড়ে গিয়ে ০.০৭ শতাংশ কমে থামল ৮২,১০২ পয়েন্টে। নিফটি সূচকও পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়াল ২৫,১৯৭.৫০ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ০.১৩ শতাংশ কম। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে আইটি, এফএমসিজি এবং প্রতিরক্ষা খাতের সূচকে, যা প্রায় ১ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসে। বুধবার সকাল ৭টায় গিফট নিফটি ৪০ পয়েন্ট নীচে ২৫,২০০-তে লেনদেন করছিল, পতন ০.১৬ শতাংশ।
ভারতের পাশাপাশি গোটা এশিয়ার বাজারে বুধবার পতন দেখা গেছে। এর অন্যতম কারণ মার্কিন শেয়ারবাজারের ক্ষতি। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেছেন এই বলে যে, “শেয়ারের দাম যথেষ্ট উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে”। তাঁর আরও মন্তব্য, “ফেড একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে”, যা বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। তবে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত দেননি।
ভারতীয় বাজারের জন্য আরও এক ধাক্কা এসেছে আগস্ট মাসের ক্রয় ব্যবস্থাপক সূচক (PMI) থেকে। আগের মাসের তুলনায় দুর্বল এই পরিসংখ্যান বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করেছে। উৎপাদন ও পরিষেবা খাতে মন্থরতা তৈরি হওয়ায় এর প্রভাব ভারতীয় টাকা ও শেয়ার সূচকের ওপর স্পষ্টভাবে পড়ছে।
বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন মার্কিন পার্সোনাল কনজাম্পশন এক্সপেন্ডিচারস (PCE) প্রাইস ইনডেক্স প্রকাশের। একই সঙ্গে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন বাজেট পাস না হলে সরকারের কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাও আন্তর্জাতিক বাজারে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
রুপি-ডলারের রেকর্ড পতন আমদানির খরচ বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত স্থিতিশীলতা ফেরানো না গেলে আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি, বিনিয়োগ হ্রাস এবং শিল্প উৎপাদনে মন্থরতা স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। সব মিলিয়ে ভারতীয় অর্থনীতি এখন এক অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীন দুর্বলতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা নাড়িয়ে দিচ্ছে।