• নেপালের হাওয়া কি ভারতেও! রাজ্যের দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ লাদাখে, পাথর ছোঁড়া হল বিজেপি কার্যালয়ে...
    আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যের দাবিতে প্রতিবাদে কেঁপে উঠল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের লে শহর। বুধবার সকালের বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদীরা বিজেপি কার্যালয়ে পাথর ছোঁড়েন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া পুলিশের ভ্যানে। রাজ্যের মর্যাদা এবং সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চলছিল লাদাখে। বুধবার তা হিংসার রূপ নেয়।

    রাজ্যের মর্যাদা এবং সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে বুধবারর সকাল থেকেই আজ লেহ-এর রাস্তায় শত শত বিক্ষোভকারী নেমে এসেছেন। বিক্ষোভকারীরা রাজ্যের দাবিতে বুধবার অনশন ধর্মঘট পালন করছেন এবং সম্পূর্ণ বনধের ডাক দিয়েছেন। ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা লেহ-তে বিজেপি অফিসে হামলা চালায়, পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়ে মারে এবং একটি পুলিশের গাড়িও পুড়িয়ে দেয়। এর জবাবে, পুলিশ হিংস্র জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং লাঠিচার্জ করে।

    সাম্প্রতিক স্মৃতিতে লাদাখে এই প্রথম এই ধরণের সংঘর্ষ দেখা গেল। সরকারের সঙ্গে আসন্ন আলোচনার আগেই এই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। লাদাখের জনগণের দাবি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করার জন্য কেন্দ্র ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে।

    গত দুই সপ্তাহ ধরে পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় অঞ্চলটিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে অনশন করছেন। তাঁর পাশে দাঁড়াতে লেহ অ্যাপেক্স বডি বুধবার প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। 

    গত ২০ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক লাদাখের নেতৃত্বের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা শুরু করার কথা জানায়। দফা অক্টোবরে সেই আলোচনার দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। লাদাখে লেহ অ্যাপেক্স বডি এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (KDA) এর অধীনে রাজনৈতিক শক্তিগুলি রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তফসিলের মর্যাদা দাবিতে দীর্ঘ বিক্ষোভের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২ জানুয়ারি একটি উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করেছিল।

    গত তিন বছর ধরে লাদাখে সরাসরি কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বাসিন্দারা বারবার তাদের জমি, সংস্কৃতি এবং সম্পদ রক্ষার জন্য রাজ্যের মর্যাদা এবং সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবি জানাচ্ছেন।

    ২০১৯ সালের আগস্টে ৩৭০ ধারা বাতিল এবং জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে দ্বিখণ্ডিত করার পর লাদাখকে একটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই সময়ে ওয়াংচুক-সহ লেহ-র অনেকেই এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই, লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রশাসনের অধীনে রাজনৈতিক শূন্যতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে।

    এই অসন্তোষের ফলে বৃহৎ আকারের বিক্ষোভ এবং অনশন শুরু হয়। লেহ অ্যাপেক্স বডি এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স-এর অধীনে প্রথমবারের মতো বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ লেহ এবং মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ কার্গিলের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলি একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ শুরু করে।

    কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের নেতা সাজাদ কার্গিল এক্স-এ লিখেছেন, “লেহ-তে যা হচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। কেন্দ্রীয় সরকারের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির পরীক্ষার ফলে শান্তিপূর্ণ লাদাখ অশান্ত হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রের উপর দায়িত্ব বর্তাবে, লাদাখের মানুষের কথা শোনা এবং আলোচনা পুনরায় শুরু করা। আমি সকলকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাই।” 
  • Link to this news (আজকাল)