পূর্ব ভারতে প্রথম হাই-এন্ড রোবোটিক সার্জারি', নজির গড়ল এসএসকেএম...
আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: নজির গড়ল এসএসকেএম হাসপাতাল। সফলভাবে হাসপাতালে চালু হল 'হাই-এন্ড রোবোটিক সার্জারি'। যা পূর্ব ভারতে প্রথম কোনো সরকারি হাসপাতালে হল। মঙ্গলবার তিন সার্জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের উপস্থিতিতে রোবোটের সাহায্যে এই অস্ত্রোপচার করা হয়। যে তিন সার্জনের হাত ধরে এই হাই-এন্ড রোবোটিক সার্জারি শুরু হল তাঁরা হলেন অঙ্কো সার্জন অধ্যাপক ডাঃ দীপেন্দ্র সরকার এসএসকেএম-এর সার্জারি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডাঃ সিরাজ আহমেদ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন ডাঃ রুদ্রদীপ ব্যানার্জি। রোগী বছর ৪০-এর একজন মহিলা।
এই বিষয়ে হাসপাতালের একটি সূত্রে জানিয়েছে, পূর্ব ভারতে এই হাসপাতালেই প্রথম এই ধরনের হাই-এন্ড রোবোটিক সার্জারি হল। রোগী গলব্লাডার-এ সমস্যায় ভুগছিলেন। এই অস্ত্রোপচার করতে সময় লেগেছে প্রায় এক ঘন্টার মতো। তবে ভবিষ্যতে সময় আরও কম লাগবে। সবমিলিয়ে গোটা জিনিসটা অবশ্যই একটা বড় বিষয়। এর আগে হাসপাতালের অন্য বিভাগে রোবোটিক সার্জারি হলেও এত হাই-এন্ড রোবোটিক সার্জারি মঙ্গলবারই প্রথম হল বলে হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
রাজ্যে সরকারি হাসপাতালের মধ্যে প্রথম এসএসকেএম হাসপাতালেই শুরু হয় এই রোবোটিক সার্জারি। যেখানে কম্পিউটার-এর মাধ্যমে রোবটের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করেন। এই সার্জারির সুবিধা হল এতে অনেক বেশি নৈপুণ্যের সঙ্গে অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক কিছুটা দূরে একটি কম্পিউটারের সামনে বসে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করেন। অনেক জটিল অস্ত্রোপচারও এর সাহায্য নিয়ে নির্ভুলভাবে করা সম্ভব। সেইসঙ্গে রোগীর শরীরে অনেক ছোট ছিদ্র করা হয়। এর ফলে রক্তক্ষরণ অনেক কম হয়। অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষত ছোট হওয়ার জন্য রোগীর পরবর্তী সময়ে ব্যাথা যেমন কম হয় তেমনি ক্ষত দ্রুত শুকিয়েও যায়। ফলে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
এসএসকেএম হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের ব্যবস্থা চালু হওয়ার অর্থ হল সেটা প্রান্তিক মানুষের কাজে লাগা। রোবোটিক সার্জারি যখন কেউ বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে করাবেন তখন তাঁকে একটা বড় খরচ বহন করতে হবে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে রোগীকে এক টাকাও খরচ করার প্রয়োজন পড়বে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে গোটা অস্ত্রোপচারটাই হবে বিনামূল্যে। উদাহরণ দিয়ে ওই আধিকারিকের কথায়, 'মঙ্গলবার যে গলব্লাডার-এর অস্ত্রোপচার হয়েছে সেটা যদি বেসরকারি হাসপাতালে রোবোটিক সার্জারির মাধ্যমে হত তবে তার খরচ কম করেও আড়াই লক্ষ টাকা হত। কিন্তু এখানে তাঁকে এক পয়সাও খরচ করতে হয়নি।'
উল্লেখ্য, পূর্ব ভারতে উন্নত চিকিৎসার ক্ষেত্রে বরাবরই এগিয়ে এসএসকেএম হাসপাতাল। এর আগে 'প্লাজমা এক্সচেঞ্জ'র মাধ্যমে এই হাসপাতাল সুস্থ করে তুলেছিল লিভার খারাপ হয়ে যাওয়া প্রায় মরণাপন্ন এক রোগীকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে বলা হয় 'লিভার ফেইলিওর পেশেন্ট'। এই রোগীকে 'লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট'-এর পরামর্শ দিয়েছিল রাজ্যের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। গত বছরের মে মাসে এই সাফল্য পায় এসএসকেএম-এর স্কুল অফ ডায়জেস্টিভ অ্যান্ড লিভার ডিজিজেজ (এসডিএলডি) বিভাগ। এসডিএলডি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. মহিনউদ্দিন আহমেদ জানান, 'রাজ্যে এই প্রথম ট্র্যানসপ্ল্যান্ট ছাড়াও লিভারের কঠিন অসুখে ভোগা একজন রোগীকে প্লাজমা এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।'