সন্ধ্যার মধ্যে জল নামিয়ে বিধাননগর পুরসভা ১০-এ ১০, ঐতিহাসিক বৃষ্টির মোকাবিলা করে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ...
আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার গভীর রাত থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত রেকর্ড বৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে গড়ে ২৪৭.৫ মিলিমিটার। শহরের আদি বাসিন্দারাও মনে করতে পারছেন না শেষ কবে এত বৃষ্টি দেখেছেন। পুজোর বাকি হাতে গোনা তিন দিন তার আগে এই অঝোর বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছে পুজো উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে মৃৎশিল্পীদের। সমাজমাধ্যমের দৌলতে নানা ভিডিও চোখে পড়েছে সকলের। কাশী বোস লেন, টালা প্রত্যয়, শ্রীভূমির মতো বড় পুজোর ঢোকার রাস্তা, মণ্ডপ প্রাঙ্গণ জলের তলায়। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সারাদিন পরিস্থিতি নজরে রেখেছিলেন। মেয়র বলেছিলেন রাত ১০টার পর জল নামতে শুরু করবে। ঠিক বলেছিলেন তিনি। বুধবার সকালেই আলাদা চিত্র। কোথাও জলের চিহ্ন নেই।
গোটা কলকাতার মতোই ডুবে গিয়েছিল বিধাননগর পুরনিগমের বিস্তীর্ণ এলাকা। হাডকো মোড়ে ছিল হাটু জল। উল্টোডাঙা থেকে সল্টলেক আসার পথে বিপুল জল জমেছিল মঙ্গলবার। সেক্টর ফাইভ মেট্রো স্টেশন থেকে আর এস সফ্টওয়্যার মোড় পর্যন্ত রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছিল। রাস্তা কোনটা, ফুটপাথই বা কোনটা বোঝার উপায় ছিল না। কিন্তু এই পরীক্ষায় সসম্মানে উতরে গেল বিধাননগর পুরনিগম। দশ-এ দশ। বুধবার সকাল থেকে কোথাও সামান্য জলে জমে ছিল না।
যে সব জায়গায় বেশি জল জমে যেমন, উইপ্রো, মহিষবাথান, করুণাময়ী, কলেজ মোড়। সে সব জায়গা শুকনো খটখটে। অটো-বাস চলছে আর পাঁচটা দিনের মতোই। দোকানপাট খুলেছে। অফিস পাড়ায় কর্মীদের নিয়মিত ছন্দ ফিরে এসেছে। মঙ্গলবার বৃষ্টির দাপটে বিধাননগর-সেক্টর ফাইভ রুটে প্রায় ১০০টি অটোয় যান্ত্রিক গোলযোগ হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। সেগুলিও পরিষেবা দিতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে সারাদিন হয়ে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত সব ক’টি পাম্পিং স্টেশন প্রায় সমান তালে কাজ করায় জল আশাতীত গতিতে নেমে গিয়েছে।
এই বিষয়ে বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “এখানে কোনও ম্যাজিক নেই। সবাই মিলে চেষ্টা করে এই জল আমরা নামাতে পেরেছি। দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি এবং দুর্যোগের সঙ্গে সময় মতো লড়াই করার ফলে দুর্ভোগ কমেছে। প্রকৃতির সঙ্গে সত্যিই কেউ লড়াই করতে পারে না তবুও আমরা চেষ্টা করেছি বলেই সময় মতো জল নেমে গিয়েছে।”
তবুও চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। বৃষ্টির ভ্রুকূটি রয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার থেকেই ফের একটি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ এবং ২৬ সেপ্টেম্বর ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে জনজীবন ব্যাহত হয়েছিল মঙ্গলবার। কোথাও হাটু সমান জল। কোথাও বাড়ি একতলা জলের তলায়। সকাল থেকে ব্যাহত হয়েছিল মেট্রো পরিষেবা। স্বাভাবিক হতে দুপুর গড়িয়ে যায়। জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পরীক্ষা বাতিল করেছে। শহরে একাধিক সরকারি স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কর্মসূচি অনুযায়ী সব পুজোর উদ্বোধন করেছেন ভার্চুয়ালি।