ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে আবারও মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের। রাজস্থানে কাজে গিয়ে মারা গেলেন মালদহের এক শ্রমিক। মৃতের নাম শৌভিক শেখ। বয়স ১৯ বছর। বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার বেদরাবাদ গ্রামের দরিয়াপুরের ভাদুটোলায়। তিনি রাজস্থানে টাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ কারখানায় কাজ করতেন। সেই কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বলে খবর। ওই তরুণের অকালমৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার।
কারখানায় কাজ করার সময় তাঁর মাথার উপর লোহার রড এসে পড়েছিল বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে কাজের সন্ধানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন মালদহের বৈষ্ণবনগরের ওই পরিযায়ী শ্রমিক। রাজস্থানের একটি বহুজাতিক কোম্পানির টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার রাতে রাজস্থানের ওই প্লান্ট থেকে সহকর্মীরা শৌভিকের বাড়িতে ফোন করেছিলেন। জানা যায়, কাজের ফাঁকে প্লান্ট এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন তিনি। সে সময় হঠাৎ বিরাট লোহার রড তাঁর মাথার উপর এসে পড়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। লোহার রডের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃ্ত্যু হয়। থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বৈষ্ণবনগরের ভাদুটোলা গ্রামের বাড়িতে এই খবর পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সবাই। মৃত শ্রমিকের বাবা রবিউল শেখ বলেন, ‘সংসারের অভাব চলছিল। তাই কিছু রোজগারের আশায় ছেলেকে বাইরে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু বাড়ির ছেলেকে এভাবে হারাতে হবে, সেটা ভাবতেই পারিনি। ছেলেকে আর ফিরে পাব না।”
স্থানীয় শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শৌভিক পড়াশোনায় ভালো ছিল। দারিদ্র্যের কারণে সংসার চালানোর হাল ধরতে হয় তাঁকে। পড়াশোনা ছেড়ে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তাঁকে কাজের জন্য রাজস্থানে যেতে হয়েছিল।‘ বেদরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিটু শেখ জানান , ‘আমরা চাই রাজস্থানের ওই কোম্পানি শৌভিকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিক।‘ ওই শ্রমিকের কফিনবন্দি নিথর দেহ কখন ফিরবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছে শোকস্তব্ধ পরিবার।